এখনও পেগাসাস নিয়ে চলছে বিতর্ক। পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ উত্তর এখনও পর্যন্ত একবারও পাওয়া যায়নি মোদী সরকারের কাছে। সংসদ থেকে আদালত, সর্বত্র সরাসরি উত্তর না দিয়ে সরকারি বিবৃতি আগাগোড়াই ছিল ধোঁয়াশায় ভরা। এই অভিযোগ করেছে একাধিক বিরোধী দল। গত সেপ্টেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে রীতিমতো তিরস্কার করে জানায়, আমরা আপনাদের বারংবার বলছি হলফনামা জমা দিয়ে উত্তর দিতে। এই ইস্যুতে সরকারকে অবস্থান জানাতে বলা হচ্ছে একাধিকবার। সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছিলেন, “হলফনামা জমা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রকাশ্যে এই নিয়ে কিছু বলাও সম্ভব নয়। কারণ জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তা বিপজ্জনক। আমরা সন্ত্রাসবাদীদের সুযোগ করে দিতে পারি না।” প্রত্যুত্তরে তৎক্ষণাৎ পাল্টা সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে বলে, “না না মিস্টার মেহতা। আপনাকে পূর্ববর্তী শুনানিতেও আমরা বলেছিলাম, হলফনামা জমা দিন। আমরা আবার বলছি। এই ব্যাপারে জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাত শুনতে চাই না। আমাদের নাগরিকদের ফোন ট্যাপ করা হয়েছে। আমাদের কিছু করতেই হবে। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির শীঘ্রই রিপোর্ট দেওয়ারও কথা।”
উল্লেখ্য, ১৯ জুলাই, ২০২১, লোকসভায় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বিবৃতি দিয়ে বলেন, গোটা অভিযোগটিই ভিত্তিহীন। ভারতে সরকারি অনুমোদন ছাড়া কোনও সংস্থার পক্ষে কোনও বেআইনি নজরদারি অসম্ভব। এ ব্যাপারে যে অভিযোগ উঠেছে তার শক্তিশালী কোনও ভিত্তিই নেই। এটি সম্পূর্ণ অসত্য। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, মোদী সরকার স্পষ্ট করে বলছে না যে ভারত সরকার এরকম কোনও স্পাইওয়্যার ব্যবহারই করেনি কিংবা পেগাসাস আড়িপাতার প্রযুক্তি তারা ক্রয় করেনি। বিরোধীদের এই প্রশ্নের জবাব তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য দেয়নি। ৯ আগস্ট ২০২১, রাজ্যসভার সদস্য সিপিএমের এমপি ভি শিবদাসনের একটি প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় ভাট বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে ইজরায়েলের এনএসও সংস্থার কোনওরকম আর্থিক লেনদেনই হয়নি। সিপিআই এমপি বিনয় বিশ্বম ১২ আগস্ট অভিযোগ করেছিলেন, পেগাসাস নিয়ে তিনি রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্ন করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে জানানো হয় যে, ওই প্রশ্ন খারিজ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রশ্নটির সম্মুখীনই হতেই রাজি নয় মোদী সরকার।
