ক্রমশই আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জেরবার হচ্ছে পদ্ম-পরিবার। “বিজেপির জেলা কমিটি নয়, জগা একাদশ কমিটি তৈরি হয়েছে। যাঁরা সাংসদকে তৈলমর্দন করেছেন, তাঁদেরই ওই কমিটিতে রাখা হয়েছে।” শনিবার এই ভাষাতেই রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ উগরে দিলেন বিজেপির নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ। বিজেপির জেলা কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দলের অন্দরে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। এবার সেই আগুনে ঘি ঢাললেন নতুন কমিটিতে স্থান না পাওয়া বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা বিশ্বজিৎবাবু। পুরসভা ভোটের আগে দলীয় কোন্দলের ঘটনা রাজ্য নেতাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কীভাবে এর সমাধান হবে, তা নিয়ে জেলা নেতাদের একাংশের দুশ্চিন্তা বেড়েছে।
বিজেপি সূত্র অনুযায়ী, গত ২৬শে জানুয়ারি নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। কিন্তু, সেই কমিটিতে ঠাঁই হয়নি প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ, প্রাক্তন সহ-সভাপতি নিরঞ্জন বিশ্বাসের মতো দুর্দিনে সংগঠনের দায়িত্ব সামলানো নেতাদের। যে কারণে নতুন জেলা কমিটি মেনে নিতে না পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে নেতা-কর্মীদের একাংশ। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর এই নেতারা রানাঘাটের সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তাঁদের দাবি, ২৩ জনের জেলা কমিটি গঠিত হলেও অধিকাংশ নেতা সাংসদ ঘনিষ্ঠ। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “১৯৯২ সাল থেকে আমি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। বিগত দিনে বুথ, পঞ্চায়েত ও জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু, নতুন জেলা কমিটিতে আমাকে রাখা হয়নি। তবে পদ না পেলেও আমি দলের হয়েই কাজ করব। এরপরই সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, নতুন যে জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে, তা দেখে মনে হচ্ছে, এটা বিজেপির কোনও জেলা কমিটি নয়। বরং ‘জগা একাদশ’ কমিটি গঠন হয়েছে। যাঁরা সদ্য অন্য দল ত্যাগ করে বিজেপিতে এসে সাংসদ জগন্নাথবাবুকে তৈলমর্দন করেছেন, তাঁদেরই এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। সাংসদ একাধিক অনিয়মে যুক্ত। তাঁর সাংসদ হওয়াটাও আমাদের কাছে দুর্ভাগ্যের।” উল্লেখ্য, জেলা কমিটি ঘোষণা হওয়ার পরই দলের প্রাক্তন জেলা সহ সভাপতি তথা শান্তিপুর উপনির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করে সাংসদ বলেছিলেন, তিনি শান্তিপুরের বাসিন্দা নন। তারই পাল্টা হিসেবে নিরঞ্জনবাবুও সাংসদকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। দলের অন্দরে এমন কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যেই এদিন বিশ্বজিৎবাবুর বক্তব্য নতুন করে অস্বস্তি বাড়িয়েছে গেরুয়াশিবিরের।
