যত দিন যাচ্ছে, ক্রমশ অস্বস্তি বাড়ছে পদ্মশিবিরের। বঙ্গ বিজেপিতে অব্যাহত অন্তর্দ্বন্দ্ব। এই পরিস্থিতিতেই বিজেপিকে রীতিমতো তুলোধোনা করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “বিজেপি আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে আছে। একদিকে আদি বিজেপি, একদিকে তৎকাল বিজেপি, একদিকে পরিযায়ী বিজেপি। এই তিন বিজেপির লড়াই তো বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে চলছে। কয়েকজন তৎকাল বিজেপি। তারা গিয়ে দলটাকে দখল করতে চেয়েছেন। যারা অনেকদিন ধরে করে এসেছেন তাঁরা অনেকদিক ধরে করছেন এবং অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন। যেখানে বিজেপির রাজ্য নেতাদের উপর তাঁদের নেতারাই আস্থা রাখতে পারেন না, তো বাংলার মানুষ কী আস্থা রাখবেন?” পাশাপাশি তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ আরও বলেন, “একের পর এক শোকজের চিঠি পড়ে তো বোঝাই যাচ্ছে না কীসের জন্য তা পাঠানো? সাধারণ চিঠি লিখতে গেলেও তো একটা বয়ান লাগে। এরা তো শোকজের চিঠি লিখতেও জানে না। দলবিরোধী কোনটা? সেটাই নেই। যদিও এগুলো তাদের ব্যাপার। আমাদের কিছু বলার নেই। বিজেপি একটা ছেলেমানুষির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ঝগড়াঝাটি একে চিঠি দাও, তাকে চিঠি দাও। যারা দল চালাচ্ছে তারা দল চালানো দূরের কথা, তারা চিঠি পাঠাতে পারেন না। ফলে যারা চিঠি পাচ্ছেন, তাদের অনেক সুবিধা হয়ে যাচ্ছে। উত্তর দিতে অনেক সুবিধা হবে।”
পাশাপাশি কুণাল ঘোষের কথায়, “তথাগত রায়কে শোকজ বা তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার সাহস পাচ্ছে না বিজেপি। এতে প্রমাণ হয়, তথাগত রায়ের কামিনী কাঞ্চন তত্ত্ব বিজেপি স্বীকার করে নিচ্ছে। তথাগত বলেছেন, কামিনী কাঞ্চন দিয়ে দল চলছে। তাঁকে কোনওরকম সতর্ক করা, অনুরোধ করা, ভৎর্সনা করা, নিষেধ করার কথা কেউ শোনেননি। বিজেপির একের পর এক তথাকথিত বড়নেতাকে চিঠি দেওয়ার যখন কোনও মুরোদ নেই, তখন কয়েকজনের বিরুদ্ধে চিঠি দিচ্ছেন। এর থেকে একটাই উপসংহারে পৌঁছচ্ছি যে, কামিনী কাঞ্চন তত্ত্ব মেনে নিচ্ছে বিজেপি নেতৃত্ব। এত বড় অভিযোগটা যদি তারা না মানতেন তা হলে তথাগতবাবুর বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই একটা চিঠি হত। পার্টির তরফ থেকে মানহানির মামলা হত।”
এছাড়া অমিতাভদের বিরুদ্ধে পোস্টার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিজেপির সঙ্গে বাংলার মানুষ, বাংলার উন্নয়ন, রাজনীতি কোনও সম্পর্ক নেই। দলটায় আদি বিজেপি বনাম তৎকাল বিজেপি, পরিযায়ী বিজেপির দখলদারির খেলা চলছে। কিছু তৎকাল বিজেপি কিছু পরিযায়ী বিজেপির মদতে দলটাকে দখল করতে চাইছে। আর আদি বিজেপি একরাশ যন্ত্রণা নিয়ে সেটাকে প্রতিহত করতে চাইছে। কখনও এরা পিকনিক করছে, কখনও তারা পোস্টার দিচ্ছে। এর সঙ্গে বাংলার মানুষের বাংলার রাজনীতির ভালমন্দের কোনও সম্পর্ক নেই। তারা একটা জনবিচ্ছিন্ন দল। বিজেপি এখন শীতকালের সার্কাসে পরিণত হয়েছে। এখন নতুন বন্যপ্রাণ আইন অনুযায়ী সার্কাসে তো বাঘ-সিংহ থাকে না। ফলে কথা শেখানো টিয়া পাখি আর জোকার এদের দিয়ে শীতকালের সার্কাস চলে। বিজেপি সেরকম একটা সার্কাসের তাঁবুতে পরিণত হয়েছে।” অভিনেতা বনি সেনগুপ্তের বিজেপি-ত্যাগ প্রসঙ্গেও গেরুয়াশিবিরকে তীব্র কটাক্ষ করেন কুণাল। বলেন, “বিধানসভা ভোটের আগে যারা এদের মঞ্চ আলো করে যোগদান করিয়েছিলেন তাঁরা কই? তখন তো বলতেন বিজেপি আসছে বিজেপি আসছে। এদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যারা বিজেপি ছাড়ছেন তাদের যোগদানের দিনের ছবি দেখুন। তাদের কৈফিয়ত যাওয়ার কথা। যারা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন তারা ছাড়ছেন।”