কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। “এখনই স্কুল-কলেজ বন্ধের কথা বলিনি,” এবার রাজ্যের ওমিক্রন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন মমতা। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির উপর আমরা প্রতি মুহূর্তে নজর রাখছি। উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কোনওভাবেই উত্তেজনা ছড়াবেন না।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষিত রাখা আমাদের কাছে প্রাথমিকতা পাচ্ছে। পুরো পরিস্থিতি আমরা গুরুত্ব দিয়ে রিভিউ করছি।” এখনই সব বন্ধ করার প্রয়োজন নেই বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, গতকালই রাজ্যে স্কুল কলেজ খোলা রাখার মতো পরিস্থিতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে প্রয়োজনে কনন্টেইনমেন্ট জোন ফেরানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা না করে এখনই স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হবে না, বৃহস্পতিবার স্পষ্ট করে দিলেন মমতা।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিডগ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখছে কলকাতা। বুধবার রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এক হাজার ৮৯ জন। এর মধ্যে কলকাতাতেই আক্রান্ত ৫০০-র বেশি, সংখ্যাটা ৫৪০। এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কলকাতায় বিভিন্ন রাজ্য, বিদেশ থেকে মানুষজন আসেন।” আর বিদেশ থেকে আগত যাত্রীরা কলকাতার কোভিড গ্রাফে প্রভাব ফেলছে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কলকাতা বিমানবন্দরে উপযুক্ত কোভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে এবং কোনওভাবেই যাতে অন্যান্য দেশ থেকে আগত যাত্রীদের থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে সেই বিষয়ে তৎপর প্রশাসন। কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে সার্বিক কোভিড পরিস্থিতির উপর। অবিলম্বে বিদেশি বিমান ওঠানামার বন্ধ প্রয়োজন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এদিন লকডাউন প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গত দুই বছরে লকডাউন দেখেছি। অনেক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই এখনই লকডাউন করা হবে না।” তবে প্রয়োজনে কনটেনমেন্ট জোন ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান তিনি। ওমিক্রন প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ব্রিটেন থেকে আগতদের দেহে ওমিক্রন সংক্রমণ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। নজর রাখা হচ্ছে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির উপর।” এদিকে এই ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফ দেখার পর প্রশ্ন উঠছিল, তবে কি বর্ষবরণের উৎসব বাতিলের জন্য নির্দেশিকা জারি করবে সরকার? প্রশ্নের জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন, এই ধরনের কোনও নির্দেশিকা জারির পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত নেই সরকারের।
