এবার বাংলার বিলুপ্তপ্রায় গাছ রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য বনদপ্তর। আর এক্ষেত্রে তাঁর দপ্তরের সহায়ক হচ্ছে জাপানি প্রযুক্তি। বিভিন্ন বৈচিত্রের বিলুপ্তপ্রায় ও দেশীয় গাছ বাঁচাতে জাপান সরকারের সহায়তায় ‘জাপান টু ইন্ডিয়া’ নামক প্রকল্প গড়ে তুলেছে রাজ্যের বনদপ্তর। রাজ্যের ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ’ প্রকল্পই হল ‘জাপান টু ইন্ডিয়া’। জাপান সরকারের প্রদত্ত ‘উন্নয়ন সহায়ক ঋণ’-এর মাধ্যমে রাজ্যের বনবিভাগ বিলুপ্তপ্রায় গাছ জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করে বাগান তৈরি করছে। দেশীয় গাছের চারা বিশেষ কায়দায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে। কাঁকসার গোপালপুরের বামুনাড়ায় চলছে এই ভারত-জাপান প্রকল্প। প্রায় ১০০ রকমের বিলুপ্তপ্রায় গাছের চারা সংগ্রহ করে চলছে প্রকল্পটি।
প্রসঙ্গত, দেশীয় গাছ যেমন, তাল, খেজুর, নারকেল ও সুপারি ও বিলুপ্তপ্রায় গাছ যেমন শাল, আমলকি, অর্জুন, কুচলা, মেহুল কিংবা বন-নিম গাছের চারা বেড়ে উঠছে বনদপ্তরের দুর্গাপুর রেঞ্জের ভেতরেই। জাপানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কীভাবে গাছকে বাড়িয়ে তোলা যায়, সেই প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় বনদপ্তরের কর্মীদের। ২০১৪ সাল থেকে বাংলার বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ‘জাপান টু ইন্ডিয়া’ নামের এই প্রকল্প শুরু হয়। পচনশীল জৈব সার তৈরি করে গাছের চারায় দেওয়া হয় বৃদ্ধির জন্যে। মাটিতে নয়, শূন্যে লোহার ব্র্যাকেট তৈরি করে সেখানেই তৈরি হয় গাছের চারা।
উল্লেখ্য, এই বাগান তৈরিতে ৯ জনের কর্মসংস্থানও হয়েছে। পাশাপাশি এই প্রকল্পের মাধ্যমে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আর্থিকভাবে বিনা শুল্কে ঋণ দেওয়া হয়। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার মানুষদের আর্থিকভাবে আত্মনির্ভর করে তোলার জন্য এই উদ্যোগ। জাপান সরকারের এই প্রকল্পের আধিকারিকরা রাজ্যেও আসেন এবং বাগান পরিদর্শন করেন। ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রকল্পের অগ্রগতি দেখে। বনদপ্তরের পূর্ব বর্ধমানের দুর্গাপুরের রেঞ্জার তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জাপান সরকারের আর্থিক সাহায্যে ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের মুখে। দ্বিতীয় প্রকল্পের কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে বলেও জাপান সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”