মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই নাগাল্যান্ডে ভারতীয় সেনার গুলিতে মৃত্যু হয় ১৩ জন নাগা যুবকের। জঙ্গী সন্দেহে সাধারণ নাগা যুবকদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় বাহিনী। আর এই ঘটনার পর থেকেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। সেনাবাহিনীর হাতে থাকা বিশেষ ক্ষমতা আস্পা তুলে নেওয়ার দাবি উঠেছে। যদিও এই বিষয়ে এখনও সরকারের তরফে স্পষ্ট ভাবে কিছু বলা হয়নি। এই অবস্থায় নাগাল্যান্ডের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। আর তা সে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেও ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমশ।
উক্ত ঘটনাটির পরেই সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার বার্তা দেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর কথা অমান্য করেই ক্রমশ ছড়াচ্ছে বিদ্রোহের আগুন। আর সেই আগুন এবার রাজধানী কোহিমাতেও। রাজধানী কোহিমাতে নাগা স্টুডেন্টস ফেডারেশনের তরফে বিশাল একটি মিছিল করা হয়। আর সেই মিছিল থেকে আস্পা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনীর গুলিতে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের বিচার দিতে হবে। না হলে আগামিদিনে আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে বলে হুঁশিয়ারি ছাত্র সংগঠনের। আন্দোলনকারীদের হাতে একাধিক প্ল্যাকার্ড, পোস্টার। আর সেখানে লেখা, আস্পা প্রত্যাহারের দাবি করলেই আর কত বুলেট ছোঁড়া হবে? অবিলম্বে আফস্পা ব্যান করতে হবে, কিন্তু আওয়াজ দমানো যাবে না।
উল্লেখ্য, এদিনের এই বিক্ষোভে কয়েক হাজার জমায়েত হয়। ছাত্র আন্দোলন হলেও, একাধিক সংগঠন এই র্যালিতে যোগ দেন।
নাগা যুবকদের মৃত্যুর ঘটনায় ক্রমশ টেনশন বাড়ছে। একাধিক আদিবাসী সংগঠনগুলিকে একজোট হতে শুরু করেছে। তাদের দাবি, কেন্দ্র কিংবা রাজ্য তাঁদের দাবি না মাননে আন্দোলন আরও ভয়ঙ্কর হবে আগামিদিনে। এক নাগা সংগঠনের দাবি, আগামীদিনে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা নয়। উল্লেখ্য, ঘটনার পর মন জেলা কার্যত স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। আটকে দেওয়া হয়েছে রাস্তা। বন্ধ দোকানপাট। একাংশের মতে, পরিস্থিতি ক্রমশ আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে ঘটনার বিবৃতি দিয়েছেন অমিত শাহ। তিনি সংসদে জানিয়েছেন, ভুল বোঝাবোঝির কারনে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার আগে যুবকদের নিয়ে যাওয়া গাড়িকে দাঁড়ানোর কথা বলে, কিন্তু সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে। আর এরপরেই গুলি বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, এই বিবৃতি মিথ্যা।ফলে মিথ্যা এবং ভুয়ো তথ্যের বিরুদ্ধেও আন্দোলন চলবে বলে দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা।