পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় লাভের পরই ভিনরাজ্যে দিকে চোখ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই লক্ষ্যে এ রাজ্যের শাসক দলের প্রথম টার্গেটই হল ত্রিপুরা। বাঙালি অধ্যুষিত এই রাজ্যে এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পা না পড়লেও, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবারই তাঁর প্রথম সভা থেকে বলে দিয়েছেন, ২০২৩-এ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-কে উৎখাত করেই ছাড়বেন। আর তা যে শুধু কথার কথা নয়, সে রাজ্যে তৃণমূলের সাম্প্রতিক গতিবিধিতেই স্পষ্ট। নভেম্বরেই পুর নির্বাচন রয়েছে ত্রিপুরায়। তৃণমূলের প্রথম লক্ষ্যই হল, সেই পুর নির্বাচনে জাঁকিয়ে বসা। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক লক্ষ্য এবার ত্রিপুরা, ‘মিশন ত্রিপুরা’।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা ছোট রাজ্য হতে পারে, লোকসভার সদস্য সংখ্যাও মাত্র দু’জন। তবে রাজনৈতিকভাবে ত্রিপুরার গুরুত্ব আছে যথেষ্টই। প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশের এই ছোট রাজ্যটি কিন্তু যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণও। বাংলা দখলের পরই তাই এই ত্রিপুরাতেই প্রশান্ত কিশোর তাঁর টিম ‘আই-প্যাক’ কে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন এবং সেখানে জোরকদমে কাজও শুরু করে দেন। প্রশান্ত কিশোর নিজে এই সংস্থা থেকে ইস্তফা দিলেও এই সংস্থাটি এখনও তাঁরই নিয়ন্ত্রণে এবং এই সংস্থার কর্মীরা মূলত জেলায় জেলায় সমীক্ষা অভিযান করেছে। সেই সমীক্ষায় আশাব্যঞ্জক ফল দেখেই কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ঘাস-ফুল শিবিরের নেতারা।
তৃণমূল নেতৃত্বের পরিকল্পনা, সংগঠন বিস্তার করার ক্ষেত্রে পরিবার পিছু এগোতে হবে। তাই পরিবারের মহিলাদের সমস্যা বুঝতে হবে। তাদের সংগঠনে ধীরে ধীরে কাছে টানতে হবে বলে পরিকল্পনা সাজিয়েছে তৃণমূল। পরিবারের মহিলারা, বাকি সদস্যদের বোঝাতে যাবেন তৃণমূল নেতারা। বাংলায় ছাত্রী ও নারীদের জন্য মমতা বন্দোপাধ্যায়ের একাধিক প্রকল্প আছে। সেই প্রকল্পগুলির সুফলও ত্রিপুরার মানুষও পেতে পারেন৷ এই সব প্রকল্পের সুফল ত্রিপুরার মহিলাদের ঘরে ঘরে গিয়ে বোঝানোর কাজও শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণেও বারবার ঘুরে-ফিরে এসেছে কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্রসঙ্গও।