রবিবার শিলিগুড়িতে পুলিশের আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মঞ্চ থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপিকে। দেশে ১০০ কোটি মানুষের করোনা টিকাকরণ সম্পূর্ণ। সদ্যই কেন্দ্রীয় সরকার এই পরিসংখ্যান দেখিয়ে দেশজুড়ে সাফল্যের উদযাপন করেছে। তবে পরিসংখ্যানবিদদের একাংশ হিসেবনিকেশ করে দেখিয়েছেন, কেন্দ্রের এই দাবি অসত্য। মোটেই ১০০ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন পাননি। দেশের মোট জনসংখ্যার নিরিখে হিসেব করলে, তা ১০০ কোটির চেয়ে বেশ খানিকটা কম। এবার এই হিসেব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “ডবল ডোজ ১০০% না হলে টিকাকরণ ১০০ শতাংশ বলা যায় না। দেশের লোকসংখ্যা কত? বাচ্চাদের সংখ্যা কত? হিসেব বলছে, ২৯.৫১ কোটি ডবল ডোজ হয়েছে। মিলিজুলি করে জুমলা করে দিয়েছে কেন্দ্র।” মমতা আরও বলেন “সারা দেশে এখনও ৩৫ কোটি মানুষ একটা ডোজ ও পায়নি। বাচ্চাদের ধরলে সংখ্যাটা ৬০-৬৫ কোটি হয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ভ্যাকসিন কিনতে চেয়েছিলাম, তাও দেয়নি। করোনার টিকার সার্টিফিকেটে নরেন্দ্র মোদীর ছবি। তাহলে ডেথ সার্টিফিকিটে কেন মোদীর ছবি থাকবে না?” টিকা বণ্টনেও পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চিত করেছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, “আমাকে সাত কোটি টিকা দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, আমরা টিকাকরণে তিন নম্বরে। মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশকে অনেক বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে বলেই তারা এগিয়ে।”
ত্রিপুরার ঘটনা নিয়েও পদ্মশিবিরকে একহাত নেন মমতা। বলেন, “বাংলাটা এখনও ত্রিপুরা হয়ে যায়নি। আমরা থাকাকালীন তা হওয়া সম্ভব নয়। বাংলাটা ত্রিপুরা নয় যে, গেলেই মাথায় মারো। একে তো মারছে। মারার পরে হাসপাতালে চিকিৎসাও করতে দিচ্ছে না। এরাই আবার মানবাধিকারের কথা বলে। ত্রিপুরায় একটা মিছিল করতে দেওয়া হয় না। সন্তোষমোহনের মেয়ের উপরও হামলা হয়েছে। বিজেপি বাংলায় হিংসার কথা বলছে, আগে ত্রিপুরাকে দেখুন। উত্তরপ্রদেশেও ঢুকতে দেওয়া হয় না।” সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ঘোষণা করেছে, যে বিএসএফ এ বার থেকে ৫০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত নজরদারি করতে পারবে। মমতা বলেন, “বিএসএফের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু বিভেদের ভাবনা নিয়ে যে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা ভালো নয়। আমরা প্রতিবেশী রাজ্যের সঙ্গে যেমন ভাল সম্পর্ক রেখে চলি, তেমনই ভুটান ও বাংলাদেশের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্কও বেশ মধুর।”