কোভিড আবহে এবার ভার্চুয়াল মাধ্যমেই ২১ জুলাইয়ে শহিদ দিবস পালন করবে তৃণমূল। বর্তমানে প্রেক্ষাপটে কেন্দ্র-রাজ্য, নবান্ন-রাজ্যপাল সংঘাত আবহে কী বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিকে নজর রয়েছে সব মহলের। তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন ২১ জুলাই শহিদ দিবসে ‘বিজয় দিবস’ পালন করবেন তিনি। কিন্তু বাঁধ সাধল করোনা। সংক্রমণ গ্রাফ এখনও উর্ধমুখী রাজ্যে। এই প্রেক্ষাপটে এবারের শহিদ স্মরণ ভার্চুয়ালেই সারবেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
এদিন সকালে শহিদ স্মরণে টুইট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘১৯৯৩ সালে এই দিনে যে ১৩ জন শহিদ হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা’। দুপুর ২টোয় শহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ভার্চুয়াল সভায় যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অত্যাচারকারীদের বিরুদ্ধে জোর গলায় আওয়াজ তোলার ডাক দিয়েছেন তিনি। টুইট করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘১৯৯৩-এর সেই যন্ত্রণাদায়ক স্মৃতি এখনও টাটকা। সেই সময়ের সরকারের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছিলেন ১৩ জন কর্মী। সেদিন আজীবন মনে থাকবে’।
এবারই প্রথম সর্বভারতীয় স্তরে বার্তা দেবেন তৃণমূল নেত্রী। লক্ষ্য ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন এবং দিল্লি-সহ দেশব্যাপী বিজেপি বিরোধিতাকে জোটবদ্ধ করার। এবছর সেই বার্তাতেই নজর রয়েছে কেবল রাজ্যের নয়, বরং গোটা দেশের। মোদী-অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন বিজেপির বঙ্গ জয় রুখেছেন মমতা। দেশের বিজেপি বিরোধী শক্তিদের কাছে তিনিই ‘মুখ’ হয়ে উঠছেন। তাই ২১ জুলাই ত্রিপুরা, আসাম, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতের মতো বিজেপি সরকারচালিত রাজ্যে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শোনার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন ১০টি রাজ্যে ক্ষমতা বিস্তারে এগোবে তৃণমূল। তবে শুধু ক্ষমতায় নয় রাজ্যজয়ের উদ্দেশ্যেই লড়াই শুরু করবে ঘাসফুল শিবির। সেই ঘোষণার প্রেক্ষিতে ভিন রাজ্যে ২১ জুলাই পালনকে সর্বভারতীয় পর্যায়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সূত্রপাত বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালে মহাকরণ অভিযানে ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অভিযানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৩ জন। এরপর এই দিনটিকেই শহিদ দিবস পালন করে আসছে তৃণমূল। এই মঞ্চ থেকেই প্রতিবার আগামী দিনে দলের লড়াই ও রাজনৈতিক বার্তাও দিয়ে থাকেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
এবারের ২১ জুলাই তাই কেবল শহিদ দিবস নয়, বরং আরও নানা দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলে বেশ কিছু সাংগঠনিক বদলও আসতে চলেছে৷ তাই ২১ জুলাইয়ে রাজ্যের পাশাপাশি দেশবাসীর উদ্দেশেও কী বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেদিকে তাকিয়ে সব মহল।