আজ সুপ্রিম কোর্টের নতুন বেঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর করা মামলার প্রথম দিনের শুনানি হল। মঙ্গলবারই নতুন বেঞ্চ গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বিনীত সরণ এবং বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরীকে নিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠিত হয়। পরে নতুন বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়। তবে শুনানি শুরু হতেই বিচারপতিরা জানান, মামলাটি কী নিয়ে, নতুন বেঞ্চ সেই বিষয়ে অবহিত নয়। তাই মামলার শুনানি প্রথমে বুধবার হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিচারপতি সরণ। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী বলেন, “নারদ মামলার শুনানি বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে রয়েছে। তাই শুক্রবার পর্যন্ত যাতে হাই কোর্টে শুনানি না হয় তার নির্দেশ দেওয়া হোক।”
বিপরীতে সিবিআই-এর আইনজীবী ও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, “আমি এর সঙ্গে একমত নই। হাই কোর্টে মামলাটির শুনানি মধ্য পর্যায়ে রয়েছে। দু’পক্ষের সওয়াল শেষ হয়েছে। এই অবস্থায় হাই কোর্টে মামলার শুনানি বন্ধ রাখা উচিত নয়।’’ এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। তখন বিচারপতি বিনীত সরণ বলেন, ‘‘আপনারা এ রকম করলে আমি মামলা ১৫ দিনের জন্য পিছিয়ে দেব।” দুই আইনজীবী শান্ত হওয়ার পর বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ২৫শে জুন, শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। এছাড়াও শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি কলকাতা হাই কোর্টকে অনুরোধ করেছেন, যাতে শুক্রবার পর্যন্ত নারদ মামলার শুনানি তারা না করে। এর আগে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তার বেঞ্চও মামলাটি হাই কোর্টকে না শোনার অনুরোধ করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ই মে নারদ-কাণ্ডে গ্রেফতার হন রাজ্যের ৪ নেতা-মন্ত্রী। ওই ঘটনার প্রতিবাদে সিবিআই দফতরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা, ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্য দিকে, বিচার চলাকালীন আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এই বিষয়গুলিকে একত্রিত করে নারদ মামলা অন্যত্র সরানোর দাবি করে সিবিআই। তাদের দাবি, প্রভাবশালীদের উপস্থিতির ফলে নিম্ন আদালতের শুনানি নিরপেক্ষ হয়নি এমন ধারণা তৈরি হবে জনমানসে। গত ২১শে মে থেকে মামলা অন্যত্র সরানো নিয়ে হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে চলে শুনানি।
এদিন প্রথমে সওয়াল করেন সিবিআইয়ের কৌঁসুলি তুষার মেহতা। তাঁর সওয়াল পর্ব শেষে অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল শুরু করেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। ৯ই জুন অভিষেকের সওয়ালের মাঝখানে মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী। কিন্তু আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এক পক্ষের সওয়াল শেষে নতুন করে হলফনামা নিলে তার উপর ফের আলোচনা হবে। তাই তখন মুখ্যমন্ত্রীর হলফনামা জমা নেয়নি আদালত। হাই কোর্টের ওই দিনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।