বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না তাঁর। মেলার মাঠে পাঁচিল তোলার সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে বক্তৃতামালায় বিজেপি সম্পর্কিত বিষয় ঢোকানো বা অধ্যাপকদের বাবা-মা তুলে অপমান — একের পর এক ইস্যুতে সমালোচিত হতে হয়েছে তাঁকে। এবার ফের বিতর্কে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সৌজন্যে এক অডিও। যেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র-ছাত্রীকে ‘মাওবাদী’ বলে আখ্যা দিয়ে সমালোচনা করেন বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গাঙ্গুলিকে। যদিও সেই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এখন খবর।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই গত ১৫ জুন হওয়া ভার্চুয়াল বৈঠকের বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়ে যায়। ওই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪০০ কর্মী ও অধ্যাপকের মধ্যে ১৮০ জন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে উপাচার্য বিশ্বভারতীর ছাত্র ঐক্যের তিন ছাত্র ছাত্রীকে মাওবাদী বলে অভিযুক্ত করেন।
বাম মনস্ক ওই তিন ছাত্রছাত্রী বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের ফাল্গুনী পান, সোমনাথ সৌ, সঙ্গীতভবনের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীকে উপাচার্যের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় ও আন্দোলন করার জন্যে প্রথমে তিন মাসের সাসপেন্ড করা হয়। সেই তিন মাস কাটার পর ওই ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে যোগ দেওয়ার আবেদন জানালে তাদের আবারও তিন মাসের জন্যে সাসপেন্ড করা হয় উপাচার্যের নির্দেশ। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে উপাসনা গৃহের সামনে রাস্তার পাশে ধর্নায় বসেন ওই তিন ছাত্রছাত্রী।
গত ১৫ জুনের বৈঠকে তাঁদেরই মাওবাদী বলে অভিযুক্ত করেন উপাচার্য। ভাইরাল হওয়া ওই অডিওতে উপাচার্য বলে চিহ্নিত ব্যক্তিকে বেশ ভর্ৎসনার সুরেই বলতে শোনা গেছে, ‘আমাদের অনির্বাণ (বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গাঙ্গুলি) ডাকছে বুদ্ধিজীবীদের বৈঠকে। আমাদের মাস্টারমশাইরা সব গিয়ে হাজির হচ্ছে। তাঁরা কিন্তু একবার ভাবল না বিদ্যুৎ চক্রবর্তী…তিনটে ছাত্র যারা মাওবাদী, সেখানে অনির্বাণ গিয়ে বৈঠক করে বলছেন, ‘আমরা উপাচার্যকে বহিষ্কার করব’। কেউ কোনও প্রতিবাদ করলাম না! তার মানে কী! উপাচার্য পাঞ্চিং ব্যাগ। মারতে থাকব, যে ভাবে খুশি মারতে থাকব। আমরা চুপচাপ থাকব। যখন ধান্দা হবে তখন আমি…।’
সাসপেন্ড হওয়া ছাত্র সোমনাথ সৌ বলেন, ‘উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার অভিভাবক। তিনি এই পরিবারের প্রধান হয়ে আমাদের মাওবাদী তকমা দিচ্ছেন এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। উনি আমাদের কেরিয়ার শেষ করতে চাইছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আসলে উনি বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রীর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে ভয় পান বলেই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নিজের পক্ষে সমর্থন জোগাড় করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন।’