দেখতে দেখতে ১ বছর হয়ে গিয়েছে। তবুও চোখ বুজলে মনে হয়, এই যেন সেদিনের কথা। হঠাতই আর্ন্তজাতিক সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিলো বিন্দিপাড়ার নাম।
আলিপুরদুয়ার থেকে ভাটিবাড়ি যাবার পথে গদাধর সেতু পেরিয়ে বাঁ দিকের রাস্তা ধরে কয়েকটা বাঁশ বাগান পেরিয়ে একটু এগিয়ে যেতেই পড়ে এই ছোট্ট গ্রামটি৷ গতবছর এই সময় দেশী, বিদেশী সংবাদ মাধ্যেম, সেনাবাহিনীর কর্তা, রাজনৈতিক নেতা, হাজারে হাজারে মানুষ ভিড় জমিয়ে ছিলেন এখানে। কারণ, পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনের সেনার অতর্কিত হামলায় শহীদ হয়েছিলেন এই গ্রামের স্থানীয় যুবক বিপুল রায়। দেশের শহীদ বীর জওয়ানকে সেদিন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিলো রাজনৈতিক দলগুলির। দেশের বীর শহীদের পরিবারের কাছের লোক হতে প্রতিযোগিতার খামতি ছিলোনা দলীয় নেতাদের। শুধু তাই নয়। এক বীর শহীদের মৃতদেহকে সামনে রেখে রাজবংশী ভোট ব্যাংকে টার্গেট করেছিলো এক নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের ভোট ম্যানেজাররা।
মাঝে মাত্র এক বছরের ব্যাবধান। রাজ্যে বিধানসভার ভোট গণনা শেষ হয়েছে মাত্র দেড়মাস। এই এক বছরের ব্যাবধানে উধাও বীর শহীদের পরিবারের প্রতি সমস্ত আবেগ, দেশ প্রেমের ভনিতা। গত এক বছরে শহীদের পরিবারের প্রতি দেশ প্রেমের শ্রদ্ধা উবে গেছে কর্পূরের মতো। শহীদ বিপুল রায়ের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী অনাড়ম্বর ভাবে পালিত হলো তার বিন্দিপাড়ার বাড়িতেই। নেই রাজনৈতিক নেতাদের ভোট দখলের প্রতিযোগিতা, নেই সংবাদ মাধ্যেমের হুড়োহুড়ি। শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতেই পালিত হলো বীর শহীদের প্রথম বার্ষিক কাজ। ঠিক এক বছর আগে চীনের লাল ফৌজের হামলায় প্রাণ হারান পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সীমান্ত সুরক্ষায় নিযুক্ত বিপুল রায়-সহ ভারতীয় সেনার ২০ জন জওয়ান। সেদিনের সেই ঘটনায় গোটা দেশ সেই বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিল। তবে বুধবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বাদে আর কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাকেই বিপুলের বাড়িতে দেখা যায়নি।