মসজিদে নমাজ পড়তে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় মাঝপথেই তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী একটি বাড়িতে। এরপর ‘জয় শ্রীরাম’, ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি তুলে তাঁকে লাঠি দিয়ে মারধর করে আক্রমণকারীরা। হ্যাঁ, গত ৫ জুন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ জেলার লোনি অঞ্চলে এমনই ঘটনা ঘটেছে বয়স্ক মুসলিম ভদ্রলোক আবদুল সামসাদের সঙ্গে।
সামসাদ জানিয়েছেন, ‘মসজিদে যাওয়ার সময় পথে কয়েকজন আমাকে অটোতে উঠতে বলে। সেই অটোতে আগে থেকে দু’জন যাত্রী ছিল। অটো মসজিদের বদলে কাছেই একটি বাড়িতে আমাকে নিয়ে যায়। একটা ঘরে বন্ধ রেখে তারা আমাকে মারধর করে। তারা আমাকে তাদের স্লোগান দিতে বাধ্য করে। আমার মোবাইল কেড়ে নেয়।’ আক্রমণকারীরা বলে, তারা আগে অনেক মুসলিমকে মেরেছে।
একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গিয়েছে, আক্রমণকারীদের একজন ফুলহাতা সাদা টি শার্ট ও নীল প্যান্ট পরে আছে। তার হাতে ছিল ছুরি। অপর এক আক্রমণকারীর পরনে ছিল কালো শার্ট ও লাল ট্রাউজার। আর একজনের পরনে ছিল আকাশি রং-এর টি শার্ট ও ধূসর রং-এর ট্রাউজার।
পুলিশ জানিয়েছে, মূল অভিযুক্তের নাম প্রভেশ গুজ্জর। তার নামে মামলা করা হয়েছে।
এর আগে মে মাসের শেষদিকেও যোগীরাজ্যে গোরক্ষকদের তাণ্ডবের কথা শোনা যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি মাংস পরিবহণ ও বিক্রির ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। মোরাদাবাদে তিনি আক্রান্ত হন। তাঁর ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে গোরক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। একইসঙ্গে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধেও মামলা করে। অভিযোগ, আক্রান্ত ব্যক্তি পশুহত্যা করে অপরাধ করেছেন। তিনি যে কাজ করেছেন, তাতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সর্বোপরি ওই ব্যবসায়ী কোভিড বিধি লঙ্ঘন করেছেন।
আক্রান্ত ব্যক্তির নাম মহম্মদ শাকির। মোরাদাবাদ পুলিশে ডেপুটি সুরারিনটেনডেন্ট জানিয়েছেন, শাকিরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে জেলে রাখা হয়নি। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি রয়েছে, তা জামিনযোগ্য। শাকিরের বিরুদ্ধে হামলায় যে নেতৃত্ব দিয়েছিল, তার নাম মনোজ ঠাকুর। তাকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। মোরাদাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, চার গোরক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও দু’জন পলাতক।