অতিসম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর দাপটে রাজ্যে ভেঙেছে প্রচুর নদী ও সমুদ্র বাঁধ। বৃহস্পতিবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে সেই বাঁধ ভাঙা নিয়ে সেচ দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে সেই সেচ দফতরের সচিবকে ভর্ৎসনার পাশাপাশি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এমন ক্ষোভ প্রকাশের পরেই তড়িঘড়ি নড়েচড়ে বসল সেচ দফতর।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সল্টলেকের জলসম্পদ ভবনে বৈঠকে বসেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। দু’ঘণ্টার বৈঠকে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই কমিটির তত্ত্বাবধানেই দুর্গত এলাকায় কাজ করবে সেচ দফতর। সূত্রের খবর, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে রাজ্যের মোট ৫টি জেলায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলভাগ। তারপরেই স্থান দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের। এরপর যথাক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলী। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে এই ঘূর্ণিঝড় হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম বলে জানা গিয়েছে সেচ দফতর সূত্রে।
মূলত ৫টি জেলায় মধ্যে মোট ২৯৩টি স্থান ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই তালিকায় যেমন রয়েছে গ্রামীণ এলাকার সেতু, তেমনই রয়েছে সুন্দরবন-সহ ও দীঘা থেকে শঙ্করপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ১২ কিলোমিটার সমুদ্র ও নদী বাঁধ। সেচমন্ত্রী জানান, “যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাতে আমাদের এখনই ১৫৭ কোটি টাকা লাগবে সবকিছু ঠিকঠাক করতে। আমরা সেতু ও বাঁধ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পর্যবেক্ষণ করার পরেই কাজে হাত দেব। কারণ এখনও বর্ষার মরসুম শুরু হয়নি। বর্ষার মরসুমের আগেই এই ধাক্কা আমাদের অনেক ক্ষতি করে দিয়েছে। তাই আমরা দ্রুততার সঙ্গেই এই কাজ করব।”
মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মা প্রকাশ নিয়ে সৌমেন বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী সব দফতরের কাজ ভাল ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। সেচ দফতরের কাজ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তারপরেই আমরা আমাদের দফতরের আধিকারিকদের সচেতন করেছি। নিশ্চিত ভাবেই তিনি কোনও জায়গা থেকে রিপোর্ট পেয়েছেন। তাই দফতরের অতিরিক্ত সচিবকে দিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছি।”