বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না বাবা রামদেবের। গত বছর থেকেই তাঁর সংস্থা পতঞ্জলির তৈরি ‘করোনিল’ নিয়ে বিতর্ক চলছে। এরই মধ্যে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য রামদেবের বিরুদ্ধে এক হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর উত্তরাখণ্ড শাখা। যোগগুরুকে পাঠানো নোটিসে আইএমএ জানিয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে ভিডিও বার্তায় অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ নিয়ে নিজের বিবৃতি বদলাতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে তাঁকে। না হলে এক হাজার কোটি টাকা দাবি করা হবে। তবে সে সব কিছুকে হেলায় উড়িয়ে এবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন রামদেব। একটি ভিডিওয় রীতিমতো তাচ্ছিল্যের সুরে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বাবা রামদেবকে কেউ গ্রেফতার করতে পারবে না। ওরা কেবল গোলমালই পাকাতে পারে। ওদের যা খুশি ওদের করতে দিন।’
প্রসঙ্গত, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে রামদেব বলেছিলেন, ‘অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা আসলে বোকামি। চিকিৎসার নামে তামাশা চলে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে।’ যোগগুরুর দাবি ছিল, করোনার বিরুদ্ধে একের পর এক অ্যালোপ্যাথি ওষুধ ব্যর্থ হচ্ছে। কারণ, ওই চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগের আসল কারণ অনুসন্ধানই করা হয় না। পরে বিতর্কের জেরে এই মন্তব্য নিয়ে সাফাই দিয়েছে তাঁর সংস্থা পতঞ্জলি। রামদেবের সংস্থার দাবি, এটা একটা গোপন বৈঠক ছিল। আর স্বামীজি হোয়াটসঅ্যাপে আসা একটি মেসেজ সকলকে পড়ে শোনাচ্ছিলেন শুধু। তাঁর এই ভিডিও সম্পাদিত এবং ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। যদিও তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। আইএমএর তরফেই রামদেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখা হয়। চাপে পড়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন চিঠি লিখে রামদেবকে ক্ষমা চাইতে অনুরোধ করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আহ্বানে বাবা রামদেব প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেও পালটা অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে গোটা ২৫ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। যোগগুরুর প্রশ্ন, অ্যালোপ্যাথি যদি এতই ভাল হবে, তাহলে চিকিৎসকরা অসুস্থ হন কেন। অ্যালোপ্যাথি ২০০ বছরেও বহু রোগের ওষুধ তৈরি করতে পারেনি কেন? এই টিপ্পনির জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় আইএমএ-র উত্তরাখণ্ড শাখা। জানিয়ে দেওয়া হয়, ১৫ দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে ক্ষমা না চাইলে যোগগুরুকে ১ হাজার কোটি টাকার মানহানির নোটিস পাঠানো হবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি লিখে তারা আবেদন জানিয়েছে, এই ধরনের ভুয়ো তথ্য ছড়ানো থেকে আটকানো হোক রামদেবকে। কেবল চিকিৎসকরাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিপুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে যোগগুরুকে। ইতিমধ্যেই ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে ‘#অ্যারেস্টরামদেব’। এবার সেই ট্রেন্ডের প্রেক্ষিতেই এমন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন রামদেব।