যশের রোষ থেকে বাঁচাতে রাজ্যের প্রায় ৯ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যশের মোকাবিলায় রাজ্যের প্রায় ৭৪ হাজার সরকারি কর্মীকে কাজে লাগানো হচ্ছে। পাশাপাশি, মানুষকে সাহায্যে প্রস্তুত রয়েছেন সিভিক পুলিশ, হোমগার্ড সহ ২ লক্ষ পুলিশ কর্মী।
মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, আজ এবং আগামীকাল যশ মোকাবিলায় নবান্নের কন্ট্রোল রুমে থাকবেন তিনি। এ দিন দুপুরেই সেই কন্ট্রোল রুমে গিয়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘উম্পুনের সময় আমরা প্রায় ১০ লক্ষ মানুষকে সরিয়েছিলাম। এবারেও ৯ লক্ষ মানুষকে ইতিমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। আমাদের প্রায় ৪ হাজার ফ্লাড সেন্টার রয়েছে। ব্লক, পুরসভা, জেলা, রাজ্য স্তরে ওয়ার রুম খোলা হয়েছে। এক একজন আইএএস অফিসারকে এক একটি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, গত বছর আমফান ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই যশের জন্য আরও ভাল ভাবে প্রস্তুত হচ্ছেন। মমতা জানিয়েছেন, দুই মেদিনীপুর সহ যে জেলাগুলিতে ঝড়ের প্রভাব সবথেকে বেশি পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেখানকার জেলাশাসকদের সঙ্গে নিজে কথা বলে ঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক নিজে করোনা আক্রান্ত হয়েও প্রস্তুতি কাজের তদারকি করছেন।
তিনি আরও জানান, পুলিশ, সেনা, চিকিৎসক, নার্স, আইসিডিএস কর্মীদের ধরে সব মিলিয়ে যশ মোকাবিলার প্রস্তুতি এবং উদ্ধারকাজের জন্য প্রায় ৩ লক্ষ জনকে নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ব্লক স্তরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেহেতু ঘূর্ণিঝড় ঝাড়খন্ডের দিকে চলে যাবে, তাই বীরভূম, বাঁকুড়ার জেলাশাসকদেরও সতর্ক করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও এ দিন গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একে ঘূর্ণিঝড় তার উপর পূর্ণিমায় ভরা কোটাল এবং চন্দ্রগ্রহণ। সব মিলিয়ে গঙ্গার জলস্তর অনেকটাই বেড়েছে। গঙ্গায় জল বাড়লে কলকাতাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’ মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য আশ্বস্ত করে বলেন, কলকাতায় এলাকা ভিত্তিক ভাবে পুরসভার কো- অর্ডিনেটরদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাতে কোথাও জল নিকাশী ব্যবস্থা নিয়ে কোথাও সমস্যা না হয়।