সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় তৃণমূলের দু’টি আসন খালি হবে খুব শীঘ্রই। কারণ, বিধানসভা ভোটের আগেই দীনেশ ত্রিবেদী নাটকীয় ভাবে সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। এদিকে, আরেক সাংসদ মানস ভুঁইয়া লড়েছিলেন বিধানসভা ভোটে। সবং থেকে তিনি জিতেছেন। এমনকি রাজ্যের মন্ত্রীও হয়েছেন। রাজ্যে মন্ত্রিত্ব থাকলে তাঁকেও রাজ্যসভার পদ ছেড়ে দিতে হবে। ফলে সেই আসনটিও খালি হওয়ার সম্ভাবনা।
অতএব, তৃণমূলের অন্দরে প্রত্যাশিত ভাবেই জল্পনা শুরু হয়েছে- ওই দুই আসনে কাকে পাঠাবেন দলনেত্রী মমতা। মন্ত্রী মানসকে কি তাঁর বিধায়ক পদে ইস্তফা দিইয়ে আবার রাজ্যসভায় পাঠানো হবে? নাকি তাঁকে রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবেই রেখে তাঁর জায়গায় অন্য কাউকে রাজ্যসভায় পাঠানো হবে। এদিকে, দীনেশ ত্রিবেদীর জায়গায় যাঁর নাম এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে, তিনি হলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা। ভোটের আগে এই প্রবীণ নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কলকাতায় এসে বিজেপি-বিরোধী প্রচার তো বটেই, নেটমাধ্যমেও তিনি বিজেপি-বিরোধিতার বিষয়ে অত্যন্ত সক্রিয়। বস্তুত, নরেন্দ্র মোদীকে রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণ করার তালিকায় যশবন্তের নাম প্রথমদিকেই থাকবে।
তবে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, যশবন্ত নিজে তাঁর ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, রাজ্যসভা সাংসদের পদের জন্য তাঁর কোনও মোহ নেই। তিনি চান নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটিকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের হাল ফেরাতে। তবে যশবন্ত যা-ই বলুন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতাই। সে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানো হোক বা না-পাঠানো হোক। রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে দীনেশ য়খন ইস্তফা দিয়েছিলেন, তখন তাঁর মেয়াদের ছ’বছরের মধ্যে মাত্রই এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। ফলে তাঁর জায়গায় যিনি রাজ্যসভায় যাবেন, তাঁর হাতে পাঁচ বছর সময় থাকবে। সে তিনি যশবন্ত হোন বা অন্য কেউ।
এদিকে, জল্পনা তৈরি হয়েছে মানস ভুঁইয়ার রাজ্যসভার সাংসদ পদ নিয়েও। মানসকে রাজ্যসভায় রেখে দিয়ে সদ্য মমতাকে ভবানীপুর কেন্দ্র ছেড়ে-দেওয়া শোভনদেবকে সবংয়ে দাঁড় করানো হবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলছে। তবে তৃণমূলের একাংশ বলছে, মানস রাজ্যেই থাকবেন। তা হলে কি তাঁর বদলে শোভনদেবকে তাঁর জায়গায় রাজ্যসভায় পাঠানো হবে? এই ক্ষেত্রে তৃণমূলের শীর্ষনেতাদের একাংশের অভিমত, দলের প্রবীণ নেতা শোভনদেব জাতীয় স্তরের চেয়ে রাজ্যের পক্ষেই ভাল। তা ছাড়া মানস সবং ছেড়ে দিলে ওই আসনের দাবিদার হতে পারেন তাঁর স্ত্রী গীতা। যিনি মানস কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গিয়ে পর্যায়কত্রমে রাজ্যসভায় যাওয়ার পর সবং থেকে উপনির্বাচনে লড়ে জিতেছিলেন।