বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোমর বেঁধে নেমেছে তৃণমূল সরকার, সংক্রমণ রুখতে রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করা হয়েছে, তখনই প্রায় ৬ বছরের পুরনো নারদকাণ্ডে অতিসক্রিয় হয়ে সোমবার সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি ফিরহাদ হাকিমকেও গ্রেফতার করেছে সিবিআই। যিনি কিনা রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করা কোভিড টাস্ক ফোর্সের দায়িত্বে ছিলেন। করোনা কালে নিজের বিশ্বস্ত সৈনিকের এই অনুপস্থিতি ব্যথিত করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ফিরহাদ হাকিম-সহ রাজ্যের চার হেভিওয়েটের গ্রেফতারি এখন আদালতের বিষয়। তাই সেসব নিয়ে মন্তব্য করতে না চাইলেও কঠিন সময়ে ‘ববি’কে পাশে না পাওয়ার আক্ষেপ গোপন করতে পারলেন না মুখ্যমন্ত্রী। বলে দিলেন, ‘ববি সারাক্ষণ ফিল্ডে থেকে কাজ করে বেড়ায়। আর এই করোনা আবহে ওকে তিন চারদিন আটকে রেখেছে। আমরা অন্যভাবে কাজটা করার চেষ্টা করছি। কিন্তু একজনের পরিবর্ত কী আর আরেকজন হয়?
প্রসঙ্গত, ফিরহাদ-সুব্রতদের গ্রেফতারির পরই মমতা ছুটে গিয়েছিলেন নিজাম প্যালেসে। সরাসরি ঘোষণা করেছিলেন, ‘গ্রেফতার করতে হলে আমাকেও করুক।’ পরে চার হেভিওয়েট সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে জামিন পেলে নিজাম প্যালেস ছাড়েন তিনি। যদিও সেই জামিনের নির্দেশে আবার স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। তারপর থেকে তাঁরা জেলেই আছেন। মমতা বলছেন, ‘আমি তো জানি ওদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেছে। মহামারী আবহে প্রতিহিংসার রাজনীতি। আমি বিচারাধীন বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বলতে পারি, এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’ এদিন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বারবার উঠে এসেছে কলকাতার পুর প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান ফিরহাদ হাকিমের নাম। তিনি বলেন, ‘ববি আর ওঁর টিম মাঠে নেমে কাজ করে। আর ওরা সেই ছেলেটাকে, সুব্রতদাকে তিন-চারদিন আটকে রাখল। ওদের সঙ্গে কী ব্যবহার করেছে! যে ছেলেটি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল দিয়েছে, সেই ছেলেটাকে… এর যোগ্য জবাব… বিচারের বাণী…আমি আশা করব…।’