২০১১ সালও বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথম কোনো মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নমুখী বাংলা গড়ার পথ চলা শুরু হয়। এরপর গত এক দশকে একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। একুশের ভোট ময়দানে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে তৃতীয়বার সরকার গড়েছেন তিনি। এই সাফল্যের পিছনে অন্যতম বড় ভূমিকা কি রয়েছে তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রকল্প ‘গতিধারা’-র?
গতিধারা প্রকল্প কী? ২০১৫-২০১৬ সালে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের স্বাবলম্বী করতে পরিবহণ দফতর একটি প্রকল্প চালু করে। যার নাম দেওয়া হয় ‘গতিধারা’। রাজ্যে বেকারত্বে রাশ টানতে এবং কর্মসংস্থানে যুব সমাজকে দিশা দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পটি চালু করেছিলেন। এই প্রকল্পের অধীনে কর্মহীন এবং এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত যুবক-যুবতীদের বাণিজ্যিক যানবাহন কেনার জন্য ঋন দেয় রাজ্য সরকার।
এই ‘গতিধারা’ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলার কর্মহীন যুবক-যুবতীদের স্বনির্ভর করে তোলাই মূল উদ্দেশ্যে ছিল সরকারের। শারীরিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষরাও এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন। এই প্রকল্পের অধীনে ২০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে বেকার যুবক- যুবতীদের তাদের বাণিজ্যিক যানবাহন কেনার জন্য ঋন দেওয়া হবে। গাড়ির ৩০ শতাংশ ভর্তুকি দেবে রাজ্য এবং অবশিষ্ট টাকা ঋন প্রাপকের দিতে হবে। সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, সমবায় ব্যাঙ্ক, গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কাছে এই প্রকল্পের জন্য আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে।
এই প্রকল্পের সুবিধাগুলো হলো:
১) গতিধারা প্রকল্পের অধীনে ২০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে বেকার যুবক এবং যুবতীরা গাড়ি কেনার জন্য আর্থিক সাহায্য পান।
২) ঋণ শোধের জন্য রাজ্য সরকার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা রাখেনি। ঋণের পরিমাণের উপর তা নির্ভরশীল।
৩) গাড়ির মোট দামের ৩০ শতাংশ ভর্তুকি জোগাবে সরকার।
যোগ্যতা:
নিয়মানুযায়ী, ‘গতিধারা’ প্রকল্পের আওতায় আসার জন্য আবেদনকারী বয়স ২০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে কেউ যদি এসসি, এসটি অথবা ওবিসি বিভাগের হয়ে থাকেন, তবে তাঁদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় যথাক্রমে ৫ বছর ও ৩ বছর পর্যন্ত ছাড় থাকবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই কর্মহীন হিসেবে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নাম নথিভুক্ত থাকতে হবে। তাঁর পারিবারিক মাসিক আয় ২৫ হাজার বা তার কম হতে হবে। এর পাশাপাশি, আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তবে পরিবারের মাত্র একজন সদস্যই এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন।