রাজ্যে চূড়ান্ত করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার সকাল হতেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। নারদ কেলেঙ্কারিতে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন নতুন সরকারের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর নারদ তদন্তে সিবিআই-এর এই গ্রেফতারির পরই নিজাম প্যালেসে পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানে পৌঁছেই সিবিআই আধিকারিকদের কাছে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল নেত্রী। সেখানে তিনি এই গ্রেফতারিকে বেআইনি বলে তাঁকেও গ্রেফতারের দাবি তোলেন।
একদিকে নেত্রী যখন সিবিআই অফিসের ভিতরে কার্যত ধর্নায় বসেছেন, তখন নিজাম প্যালেসের বাইরে তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় পতাকা নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। সময় যত বাড়ছে, ততই ভিড় বাড়ছে নিজাম প্যালেসের সামনে। শেষে বাধ্য হয়ে সামনের রাস্তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় পুলিশকে। সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বচসাতেও জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা। সকলেরই এক অভিযোগ, বাংলায় জিততে না পেরে এখন প্রতিহিংসার পথ নিয়েছে বিজেপি। তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করা হলেও কেন একই মামলায় শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়দের গ্রেফতার করা হল না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। অপরদিকে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধেও সুর তুলেছেন শাসক দলের কর্মীরা। তবে, শুধু কলকাতার নিজাম প্যালেসে নয়, গোসাবা, আরামবাগের মতো নানান জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে পথে নেমেছেন তৃণমূল কর্মীরা।
নিজাম প্যালেসে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ভিড় বাড়তেই অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। সিবিআই তরফে বাহিনীর কাছে সেই আবেদনও জানানো হয়েছে। অবশ্য সমস্যার সূত্রপাত সোমবার সকালেই। চেতলায় ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে যখন সিবিআই আধিকারিকরা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন, সেখানেও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল সমর্থকরা। তাঁরা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েও পথ আটকানোর হুমকি দেন। কিন্তু তাঁদের শান্ত করেন ফিরহাদ নিজেই।
এরপর থেকেই নিজাম প্যালেসের বাইরে জমতে থাকে ভিড়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্তও সেখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শাসক দলের কর্মীরা। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে আরও অশান্তির আশঙ্কা করছেন অনেকেই।