সাত ম্যাচ খেলে মাত্র ২টো-তে জয়। ৪ পয়েন্ট পেয়ে এইমুহূর্তে লিগ টেবিলের একদম নীচে কেকেআর। সমর্থকরা ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যমে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন, গত বার মরসুমের মাঝপথেই অধিনায়ক পরিবর্তন করা হলে এ বার কেন হবে না? প্রতি ম্যাচে অধিনায়কত্বের যা নিদর্শন দেখাচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান, তাতে অনুরাগীদের মনে বড়সড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাঁর প্রায় হাঁটুর বয়সী ঋষভ পন্থও অত্যন্ত পরিণত মানসিকতা নিয়ে নেতৃত্ব দিলেন গতকালও।
পুরনো রোগ থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না কেকেআর। পাওয়ার প্লে-র সময় যতটা সম্ভব কাজে লাগানোর লক্ষ্য থাকলেও কোনও ম্যাচেই তা সম্ভব হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার প্রথম ৬ ওভারে কেকেআর তুলল ৪৫ রান। পরে ব্যাট করতে নেমে দিল্লী প্রথম ৬ ওভারে তুলল ৬৭। যত দিন যাচ্ছে শুভমন গিল যেন আরও ধীরগতির হয়ে যাচ্ছেন। অতিরিক্ত সাবধানতা নিতে গিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল নিয়ে নিচ্ছেন। গতকাল দিল্লী ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে অনেকেই ওপেনিংয়ে বদল আনার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কেকেআর অধিনায়ক শুনলে তো!
নীতীশ রানা ভাল শুরু করেছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত উত্তেজনা নিয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পড হলেন। রাহুল ত্রিপাঠিও বেশিক্ষণ টেকেননি। মর্গ্যান তো দ্বিতীয় বলেই ছয় মারতে গিয়ে স্টিভ স্মিথকে ক্যাচ দিয়ে বসলেন। তিনি রানের খাতাই খুলতে পারলেন না। পরের বলেই আউট হলেন মিস্ট্রি স্পিনার সুনীল নারাইন। কেকেআর-এর কাছে তখন একশোর গন্ডি পেরনোই কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে বাঁচিয়ে দিলেন আন্দ্রে রাসেল। চেন্নাই ম্যাচের মতো বৃহস্পতিবারও তাড়াতাড়ি নামার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেটা কাজে লাগালেন। ২৭ বলে ৪৫ রান করে জন্মদিনে অনুরাগীদের মাতিয়ে দিলেন।
এদিকে, ব্যাট করতে নেমে বাইশ গজে রীতিমত ঝড় তুললেন দিল্লীর ওপেনার পৃথ্বী শ। শিবম মাভির প্রথম ওভারেই ৬টি বলে ৬টি চার মারেন তিনি। কার্যত সেখানেই ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল কেকেআরের হাত থেকে। বাকি সময়টা কার্যত নিয়মরক্ষার লড়াই হল ছন্দে থাকা দিল্লীর ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাসের তলানিতে থাকা কলকাতার বোলারদের। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলে ছিলেন কেকেআরের শিবম মাভি এবং দিল্লী দলের পৃথ্বী। ফলে মাভির বোলিং পৃথ্বীর ভালই চেনা ছিল।
আর পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় একটিও ভুল শট মারেননি। শুধুমাত্র সঠিক জায়গায় শট মেরে ৬টি চার আদায় করে নেন পৃথ্বী। দিল্লীর ঝড়ের ওখানেই শুরু। এরপর কোনও ভাবেই থামানো যায়নি পৃথ্বী-ধাওয়ানকে। কেকেআর বোলারদের বিন্দুমাত্র সমীহ না করে দ্রুত রান তোলার দিকে মন দিয়েছিলেন এই দু’জনে। চতুর্দশ ওভারে এসে প্যাট কামিন্স সাফল্য দিলেন কলকাতাকে। তাঁর সোজাসুজি বলে এলবিডব্লিউ হলেন ধাওয়ান। তবে ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে উঠে গিয়েছে ১৩২। অর্থাৎ, দিল্লীর জয় সেখানে প্রায় নিশ্চিত। পরে আরও দুটি উইকেট পড়লেও তাই দিল্লীর জিততে অসুবিধে হয়নি। ফলে শেষ অবধি কলকাতাকে অনায়াসে ৭ উইকেটে হারিয়ে ম্যাচ জেতে দিল্লী ক্যাপিটালস।