বৃহস্পতিবার আসানসোলের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রচারে এসে হিংসার কথা তুলে ধরে উস্কানি দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং। এমন আচরণ তাঁর শোভা পায় না। মোদীর মতো, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও নিন্দায় বিদ্ধ করেছেন মমতা।
উল্লেখ্য, গত ১৮ই এপ্রিল জামুড়িয়ার নিঘার জনসভা থেকে ২০১৮ সালের মার্চে আসানসোলে ঘটে যাওয়া হিংসার কথা তুলেছিলেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্য নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কও হয়েছিল। সেই বিতর্কের কথা টেনে এনে আসানসোলের মাটি থেকেই প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধলেন মমতা। বললেন, “আগের দিন প্রধানমন্ত্রী এসে অনেক উল্টোপাল্টা কথা বলেছেন। হিংসার কথাও উল্লেখ করেছেন। উস্কানি দেওয়ার জন্য। এটা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শোভা পায় না। আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও শোভা পায় না। এখানে হিংসা হয়েছিল। ইমাম (ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদি)-এর পুত্রও মারা গিয়েছিল। কিন্তু ইমাম কী বলেছিলেন? ‘আমার ছেলে মারা গিয়েছে যাক, কিন্তু আর কারও ছেলের যেন মৃত্যু না হয়।’ প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনে লজ্জা লাগে।”
গত লোকসভা ভোটের আগের বছর আসানসোলে ঘটে যাওয়া ওই সংঘর্ষের স্মৃতি উস্কে দিয়ে মোদী বলেছিলেন, “তিন বছর আগের রামনবমী মনে আছে? আসানসোল-রানিগঞ্জের হিংসা কে ভুলবে? অনেকের সারা জীবনের সঞ্চয় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সব থেকে ক্ষতি হয়েছিল গরিবের, দোকানদারদের। হিংসাকারীদের সঙ্গ কে দিয়েছিলেন? তুষ্টিকরণের নীতি কে নিয়েছেন? কার জন্য পুলিশ হিংসাকারীদের পক্ষে ছিল? একটাই জবাব। সবাই বলছে— দিদির কারণে।” মোদীর এই বিতর্কিত বক্তব্যের জবাব বৃহস্পতিবার আসানসোলের মাটিতে দাঁড়িয়েই দিলেন মমতা।
এদিন আসানসোলের জনসভা থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, “একটা একটা করে গুনে নেব। আজ যারা এই অত্যাচার করছে, শোষণ করছে, ভোটের দিন বিজেপির টাকা খেয়ে যারা গদ্দারি করছে, তাদের আমি বলে দিই মানুষ বুঝে নেবে, সমস্ত এ টু জেড বুঝে নেবে। এসপি বদলালে যদি ভোট হয়ে যায়, তা হলে তো হতই। ডিএম বদলালেই যদি ভোট হয়ে যায়, তা হলে তো হতই।” আত্মপ্রত্যয়ের সুরে তৃণমূলনেত্রীর দাবি, “আমরাই ক্ষমতায় থাকব। বিজেপি বাংলায় আসবে না। আমরাও পুরোটা নজরে রাখছি, মানুষ কী ভাবে ভোট দিতে পারছে, কী ভাবে পারছে না। আর কে কে অতিচালাকি করে বিজেপিকে দখল করিয়ে দিচ্ছেন, সেদিকেও কিন্তু নজর আছে। নজর অন্য দলেরও থাকতে পারে। আমাদেরও আছে। এতে আমি ভয় পাই না।”