সারা দেশে তৃতীয় পর্যায়ের টিকাকরণ শুরু ১লা মে। তবে এ রাজ্যে ১৮ ঊর্ধ্বেরা টিকা পাবেন তার ৪ দিন পর, ৫ই মে থেকে। বুধবার এমনই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, রাজ্যে ইতিমধ্যেই ১ কোটির কাছাকাছি টিকা দিয়েছে। পরবর্তী টিকাকরণের জন্য কেন্দ্রকে আরও ১ কোটি টিকা সরবরাহের আর্জি জানিয়েছে সরকার। যাতে তৃতীয় পর্যায়ের টিকাকরণে কোনও খামতি না থেকে যায়। রাজ্যে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার মালদহে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, “আগামী ২রা মে রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশের পর ৫ই মে শুরু হবে ১৮ ঊর্ধ্বদের টিকাকরণ। এর মধ্যেই ৯৩ লক্ষ টিকা দিয়েছি। তবে কেন্দ্রকে বলেছি আরও ১ কোটি টিকার ডোজ পাঠাতে। ওই টিকা দেওয়া শেষ হতে হতে আমরা আরও টিকা কেনার ব্যবস্থা করতে পারব।” মমতা জানান, টিকা কেনার জন্য ইতিমধ্যেই ১০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করা হয়েছে। তাই বাজারে টিকা এলেই কেনার কাজ শুরু করবে রাজ্য।
প্রসঙ্গত, ভোটের প্রচারসভার ফাঁকেই রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ নিয়েও বৈঠক করছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবারও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহে জনসভা ছিল মমতার। সেখান থেকেই সাংবাদিক বৈঠকে আসেন। মালদহে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেও ফেললেন, ‘”এখন ভোট নয় করোনাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই প্রচারের ফাঁকেও এর জন্য সময় বার করতে হচ্ছে।” এরপরই রাজ্যের করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা লকডাউন করব না। লকডাউনে মানুষের দুর্ভোগ হয়। আমি নোটবন্দির মতো মানুষকে গৃহবন্দী করতে চাই না।”
রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করে মমতা বলেন, “ভয় পাবন না। আতঙ্কিত হবেন না। এটা একটা ঝড়। ঝড় কেটে যাবে।” প্রথম দফার সংক্রমণের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, “আগেরবারও আমরা সামলেছিলাম। এটা ঠিকই, এ বারের পরিস্থিতি আরও গুরুতর। কিন্তু এ বারও সামলে নেব আমরা।” সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সাংবাদিক বৈঠকে সে সব তথ্য দিয়েছেন মমতা। বুধবার মমতা জানান, রোগী যাতে ফিরে না যায় সে জন্য বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে বেশ কয়েকটি করে সেফ হাউস জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্যে সেফ হাউসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। রাজ্যে যাঁরা করোনা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশে মমতার পরামর্শ, “যদি মনে করেন বাড়িতে নিভৃতাবাসে থেকে সেরে উঠতে পারবেন, তা হলে অযথা হাসপাতালের একটি শয্যা নিয়ে রাখবেন না। যাঁদের দরকার তাঁদের জন্য ওই শয্যা ছেড়ে রাখুন। বাড়িতে না থাকতে পারলে সেফ হাউসে থাকুন। সেফ হোমের সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে।”
উল্লেখ্য, রাজ্যে মোট শয্যা বাড়ানোর কথাও এ দিন বলেছেন মমতা। জানিয়েছেন, রাজ্যে এখন ১১ হাজার শয্যা রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই তা বেড়ে ১৩ হাজার হবে। সরকারের তরফে ৮০টি বেসরকারি হাসপাতাল নেওয়া হয়েছে। কোভিড হাসপাতাল করা হয়েছে ৭০টি হাসপাতালকে। আপাতত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে ৬৭৯৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন। বাড়িতে নিভৃতাবাসে রয়েছেন ৫১ হাজার ৫৯৩ জন রোগী।