২০১৯ সালে দেশের ছয় বিমানবন্দর নিলাম প্রক্রিয়ায় আপত্তি ছিল অর্থমন্ত্রক ও নীতি আয়োগের। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করেই প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয় ৬ বিমানবন্দর। সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম-এর এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গত আগস্ট মাসে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর, মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজা এয়ারপোর্টের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়ে ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি এয়ারপোর্ট অপারেটরের শিরোপা এখন আদানি গোষ্ঠীর মুকুটে। মাত্র ২০ মাসের মধ্যেই এই শিরোপা জুটিয়ে নিয়েছে গৌতম আদানির সংস্থা। এই প্রেক্ষিতে ওই সংবাদমাধ্যমের এই রিপোর্টে তীব্র শোরগোল পড়ে গিয়েছে নানা মহলে।
কেন্দ্রের মোদী সরকারের সিদ্ধান্ত নেয় এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’র অধীনে থাকা দেশের ছ’টি বিমানবন্দর সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে চালানো হবে। সেই অনুযায়ী, আহমেদাবাদ, তিরুবনন্তপুরম, লখনউ, ম্যাঙ্গালুরু, জয়পুর এবং গুয়াহাটি বিমানবন্দর পরিচালনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র জমা দিয়ে এই ছ’টি বিমানবন্দরেরই দায়িত্ব পায় আদানি গোষ্ঠী। কিন্তু এই দরপত্র আহ্বানের আগেই আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ও নীতি আয়োগ।
রিপোর্টে দাবি, এনএফডিএ সরকারের এই সর্ববৃহৎ বেসরকারিকরণ পদক্ষেপের আগে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অ্যাপ্রাইজল কমিটি। ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর এই বৈঠকের সূত্র থেকে সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যম জানায়, এই ছয় বিমানবন্দর প্রকল্পগুলিতে প্রচুর মূলধনের জোগান দরকার। তাই বিরাট আর্থিক ঝুঁকি এড়াতে একই বেসরকারি সংস্থাকে দুটোর বেশি বিমানবন্দরের ভার তুলে দিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের প্রতিনিধিরা।
তাছাড়া আদানি গোষ্ঠীর হাতে ছয় বিমানবন্দর তুলে দেওয়ার ব্যাপারে অন্য এক বিষয়ে আপত্তি জানায় নীতি আয়োগ। তাদের যুক্তি ছিল, দরকারি প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব থাকা কোনও দরদাতাকে বিমানবন্দর পরিচালনার ভার দিলে যে উচ্চমানের পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার, সেটাই ক্ষুণ্ণ হতে পারে। যদিও এসব যুক্তি উড়িয়ে দেয় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অ্যাপ্রাইজল কমিটি, দাবি রিপোর্টে। তারপর ছয় বিমানবন্দরের নিলামে জয়ী হওয়া আদানি গোষ্ঠী ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আহমেদাবাদ, মেঙ্গালুরু ও লখনউ এয়ারপোর্ট পরিচালনার জন্য কনসেশন এগ্রিমেন্টে সই করে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের।