জোরালো ভূকম্পনে ফের কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়া। শুক্রবার দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা এজেন্সি থেকে জানানো হয়েছে, গভীর রাতে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে তীব্র ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৬.২। যার জেরে এখনও পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহতের সংখ্যা কমপক্ষে কয়েকশো মানুষ। ২০১৮ সালে ৬.২ মাত্রার ভয়াবহ কম্পন হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ায়। সুলাওয়েসির পালু শহরে প্রাণ হারিয়েছিলেন হাজারেরও বেশি মানুষ। সুনামি আছড়ে পড়েছিল পালু শহরে। আশ্রয়হারা হয়েছিলেন অনেকেই। ২০১৯ সালেও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় ইন্দোনেশিয়া। ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলের প্রদেশ মালুকুতে প্রবল ভূমিকম্পের ধাক্কায় ২০ জনের মৃত্যুর পাওয়া গিয়েছিল। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬.৫।
প্রসঙ্গত, ইন্দোনেশিয়ার ম্যাজেনে শহরের উত্তর-পূর্বের ৬ কিলোমিটার দূরে ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিমি গভীরে ছিল কম্পনের কেন্দ্রবিন্দু। ভূমিকম্প অনুভূত হতেই কয়েক হাজার মানুষ আতঙ্কে ও প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। সরকার থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জোরালো ভূমিকম্পের জেরে দেশে কোনও সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি। তবে শক্তিশালী ভূমিকম্পের দ্বিতীয় তরঙ্গের জন্য আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা এজেন্সি থেকে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের জেরে শহরের বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিম সুলাওয়েসি গভর্নরের অফিস ও বেশ কয়েকটি হোটেলের দেওয়ালে চিড় ধরা পড়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিদ্যুত্ পরিষেবাও।
পাশাপাশি, সুলাওয়াসি দ্বীপের একটি হাসপাতাল ভেঙে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে ডজনেরও বেশি রোগী ও হাসপাতাল কর্মী হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ে গিয়েছে। মামুজু শহরের উদ্ধারকারী এজেন্সি জানিয়েছে, হাসপাতালটি ভূমিকম্পের কারণে ভেঙে পড়েছে। সেটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এজেন্সির মুখপাত্র জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নীচে হাসপাতালকর্মী ও রোগীরা আটকে পড়েছে। তাঁদের উদ্ধারের চষ্টা চলছে। তবে সেখানে কতজন আটকে পড়েছেন বা কেউ প্রাণ হারিয়েছেন কিনা, তা নিয়ে এখনও ধাঁধায় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারও মাঝারি কম্পনে কেঁপে উঠেছিল সুলাওয়েসির কয়েকটি জেলা। রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৫.৯। তবে সেই কম্পনের জেরে কয়েকটি বাড়ির ক্ষতি হয়েছিল। বরাবরই ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা বলে পরিচিত ইন্দোনেশিয়া। প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অফ ফায়ার’ এলাকায় ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান। যে বলয়ে প্রায়শই ঘটে থাকে অগ্ন্যুৎপাত। সেখান থেকেই জোরালো থেকে মৃদু কম্পন ছড়িয়ে পড়ে দেশটিতে।