উত্তরপ্রদেশে গোহত্যা প্রতিরোধ আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন এলাহাবাদ হাইকোর্ট। নিরীহ মানুষের উপর এই আইনের অপব্যবহার হচ্ছে বলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল হাইকোর্ট। পুলিশের তরফে দাখিল করা তথ্যপ্রমাণের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলল আদালত। পরিত্যক্ত গবাদি পশুর সুরক্ষা করতে গিয়ে যেন নিরীহ মানুষকে বিপদে না ফেলা হয় সেই বিষয়েও যোগীর পুলিশকে সতর্ক করল আদালত।
গত ১৯ অক্টোবর এই ধরনের একটি মামলায় বিচারপতি সিদ্ধার্থ একজনকে জামিন দিয়েছিলেন। রায়ে জানিয়েছিলেন, ‘এই আইন নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। যখনই কারও কাছ থেকে মাংস উদ্ধার হয়,সেটা ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা না করেই গোমাংস হিসাবে দাবি করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাংসের পরীক্ষা করা হয় না। অভিযুক্তকে জেলেই কাটাতে হয়, যখন সে দোষীই নয়। এই আইনে দোষ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। যখনই গরু উদ্ধার করা হয়, তার কোনও সঠিক মেমো তৈরি করা হয় না। তাই গরু উদ্ধারের পর সেটা কোথায় গেল কেউ জানতেই পারে না।’ এমনটা বলে পুলিশকেই ভর্ৎসনা করেছেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, রহমুদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে এই আইনে শামলি জেলা থেকে গত ৫ আগস্ট গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তাঁর আইনজীবীর দাবি ছিল, তাঁকে অকুস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়নি। সেই মামলাতেই অভিযুক্তকে জামিন দেয় আদালত। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশ সরকারের ডেটা অনুযায়ী, এবছর ১৯ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় সুরক্ষা আইনের অধীনে রাজ্যে যে ১৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার মধ্যে অর্ধেকই হল গোহত্যার অপরাধে। এবছর মোট ১৭১৬টি মামলা দায়ের হয়েছে উত্তরপ্রদেশ গোহত্যা প্রতিরোধ আইনে। মোট ৪ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তার মধ্যে মাত্র ৩২টি মামলায় পুলিশ ক্লোজার রিপোর্ট দাখিল করতে পেরেছে। বাকিগুলিতে প্রমাণাভাবে কোনও রিপোর্ট জমা করতে পারেনি পুলিশ। বিচারপতি এপ্রসঙ্গে তাঁর রায়ে বলেছেন, ‘গোশালাতে দুধ দেয় না এমন গরু বা বৃদ্ধ গরুকে রাখে না। তাই সেগুলি রাস্তায় পরিত্যক্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়। তারপর তারা নোংরা, আবর্জনা খেয়ে থাকে। তাদের জন্য রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম হয়। সর্বপরি, বহু পথ দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটে।’