খোদ বঙ্গ থেকেই এবার বাংলা ভাষাকে সকৌশলে বর্জন করতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটির বিভিন্ন ক্ষেত্রে থেকে বিদায় দেওয়া হচ্ছে বাংলাকে। এটা চূড়ান্ত বেআইনি সিদ্ধান্ত ও আইনগতভাবে অপরাধ বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। গতকালই শহরে নতুন ফুলবাগান মেট্রো স্টেশনের বাইরে নাম হিন্দি এবং ইংরাজিতে লেখা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। আর এবার অভিযোগ, লিলুয়া ওয়ার্কশপের মতো গুরুত্বপূর্ণ ডিপো থেকে বাংলা ভাষাকে সরিয়ে দিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।
সূত্রের খবর, এই শপের গেট থেকে বিভিন্ন বিভাগের যাবতীয় স্থায়ী পোষ্টার থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে বাংলা। হিন্দি আর ইংরেজি দুই ভাষাতে লেখা হচ্ছে যাবতীয় সাইন বোর্ড, গেট। মন্ত্রী লক্ষীরতন শুক্লার কথায়, রাজ্য থেকেও বাংলা ভাষাকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত কাদের, এটা আগে তদন্ত করে বের করতে হবে। পাশাপাশি তিনি জানান, রাজ্যের ক্রীড়াবিদদের তরফে তিনি এই নিয়ে কেন্দ্রের কাছে প্রতিবাদ জানাবেন।
রেলের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ শুরু করেছে কর্মী সংগঠনগুলিও। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, “থ্রি ল্যাংগুয়েজ সিস্টেম” রেলে আইনগত। প্রথমেই থাকবে আঞ্চলিক ভাষা, এরপর রাষ্ট্রভাষা (যদিও ভারতের কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই), তারপর আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজি। বেশ কয়েক মাস আগে আসানসোল স্টেশনের থেকে বাংলা ভাষা তুলে দেওয়ার পর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এরপর আবার বাংলা সংযোজিত হয়। দুর্ভাগ্য আসানসোলের ডিআরএম একজন বাঙালি। তাঁর উপস্থিতিতেই বাংলাকে সরানো হয়েছিল।
পূর্ব রেলের মেনস কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিনোদ শর্মা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ভাষা বিভাগের নির্দেশ, প্রথমে আঞ্চলিক ভাষা, এরপর হিন্দি তারপর ইংরেজি। প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি এধরনের কাজ করার নির্দেশ যিনি দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তুলেছেন তিনি। বাংলা ভাষাকে সরিয়ে দেওয়ার স্পর্ধা দেখানোর প্রতিবাদে সরব হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন সংগঠনও। অবিলম্বে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামবে তারা। পূর্ব রেলের তরফেও এটা অনুচিত ও আইন বিরুদ্ধ বলে জানানো হয়েছে।