বিপুল জনমত নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেই শিক্ষায় গৈরিকিকরণের কাজ শুরু করে দিয়েছিল মোদী সরকার। নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। যা নিয়ে এখনও চলছে বিতর্ক। এরই মধ্যে এবার আসামে দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাস থেকে বাদ নেহেরু, অযোধ্যা বিতর্ক, গুজরাত দাঙ্গা, মণ্ডল কমিশন! করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের ওপর চাপ কমাতে হবে। এই যুক্তিতে বিজেপি শাসিত এই রাজ্যে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হল গুজরাত দাঙ্গা, অযোধ্যা বিতর্ক ও মণ্ডল কমিশনের মতো অধ্যায়। একই কারণে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু সম্পর্কিত অধ্যায়, জাত ও প্রান্তিকীকরণের অংশও ছেঁটে ফেলা হল ক্লাস টুয়েলভের সিলেবাস থেকে।
প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতির জন্য পড়ুয়াদের উপর থেকে চাপ কমাতে হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে সিলেবাসের ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় আসাম উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা কাউন্সিল। স্কুল সিলেবাস থেকে যে অংশগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে এবার তারই একটি তালিকা সম্প্রতি আসাম উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘স্বাধীনতার পর ভারতের রাজনীতি’ শীর্ষক অধ্যায়টি। যার মধ্যে ছিল ‘প্রথম তিন সাধারণ নির্বাচন’, ‘জাতিগঠনে নেহেরুর দৃষ্টিভঙ্গি’, দুর্ভিক্ষ, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, নেহেরুর বিদেশ নীতি, নেহেরুর পর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার, গরিবি হঠাওয়ে রাজনীতি, গুজরাতে নবনির্মাণ আন্দোলন, পাঞ্জাব সংকট এবং ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গা।
এছাড়া মণ্ডল কমিশন রিপোর্টের বাস্তবায়ন, ইউনাইটেড ফ্রন্ট এবং এনডিএ সরকার, ২০০৪ সালের সাধারণ নির্বাচন এবং ইউপিএ সরকার, অযোধ্যা বিতর্ক এবং গুজরাত দাঙ্গা। তবে অন্যান্য অধ্যায়ের সঙ্গে টিকে থাকছে কাশ্মীর ইস্যু, ১৯৬২, ‘৬৫ ও ‘৭১ এ চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ, এমার্জেন্সি পরিস্থিতি, জনতা দল ও বিজেপির উত্থান ইত্যাদি অধ্যায়। আবার দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে আর ‘জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি’ অধ্যায়টি আর থাকছে না। ইংরেজি বিষয়ের সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘মেমরিজ অফ চাইল্ডহুড’ শীর্ষক একটি অধ্যায়। ওই অংশে পড়ুয়ারা দুই মহিলা লেখকের আত্মজীবনীমূলক লেখার কিছু অংশ পড়তেন। এঁদের একজন নেটিভ আমেরিকান লেখক ও সংস্কারক জিতকালা-সা এবং অন্যজন তামিল দলিত লেখক ও শিক্ষক বামা।