একেই বলে স্বপ্নপূরণ। প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফুটবলার হিসেবে বুন্দেশলিগায় বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে প্রথম একাদশে জায়গা করে নিলেন সরপ্রীত সিংহ। শনিবার রাতে বায়ার্ন ঘরের মাঠে ফ্রেইবার্গকে ৩-০ চূর্ণ করলেও আলোচনার কেন্দ্রে এই তরুণ মিডফিল্ডার।।
বায়ার্ন মিডফিল্ডারের বাবা ও দাদা ক্রিকেট–ফুটবল দু’টোই খেলতেন। সরপ্রীত অবশ্য ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন ফুটবলার হওয়ার। ফুটবল শেখা শুরু অকল্যান্ডের একটি অ্যাকাডেমিতে। পেশাদার ফুটবলার হওয়ার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে অকল্যান্ড ছেড়ে যখন ওয়েলিংটনে চলে যান সরপ্রীত, তখন তাঁর বয়স পনেরো। ওয়েলিংটন ফিনিক্সের যুব দলে সুযোগ পাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই ডাক পান ২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য নিউজ়িল্যান্ডের জাতীয় দলে। দু’বছর পরে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপেও সরপ্রীত ছিলেন জাতীয় দলে। ধীরে ধীরে জায়গা করে নেন ওয়েলিংটন ফিনিক্সের সিনিয়র দলেও। সেখানে পাশে পেয়েছিলেন এটিকে-কে আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন করার অন্যতম দুই কারিগর রয় কৃষ্ণ ও ডেভিড উইলিয়ামসকে।
শনিবার রাতে মিউনিখে ফ্রেইবার্গের বিরুদ্ধে বায়ার্ন যখন মাঠে নামছে, অকল্যান্ডে তখন রবিবার ভোর পাঁচটা। পরিবারের সদস্যেরা কি তাঁর খেলা দেখেছেন অত ভোরে? ঘনিষ্ঠমহলে সরপ্রীত জানিয়েছেন, বায়ার্নের ম্যাচ থাকলেই টিভির সামনে বসে পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। ফ্রেইবার্গের বিরুদ্ধে তাঁকে প্রথম দলে দেখে সকলেই উচ্ছ্বসিত।
বায়ার্নের রিজার্ভ টিমে যোগ দিলেও সরপ্রীতকে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি মূল দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য। প্রাক-মরসুম প্রতিযোগিতা ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন্স কাপে রবার্ট লেয়নডস্কিদের পাশে তিনিও ছিলেন। কিন্তু বুন্দেশলিগা শুরু হওয়ার পরে তাঁর জায়গা হল রিজার্ভ বেঞ্চে। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ওয়ের্ডার ব্রিমেনের বিরুদ্ধে প্রথমবার মাঠে নামার সুযোগ পেলেন ম্যাচের ৮২ মিনিটে। তাতে অবশ্য খুব একটা উচ্ছ্বসিত হননি এই তরুণ মিডফিল্ডার। সরপ্রীতের পাখির চোখ বায়ার্নের প্রথম একাদশে জায়গা করে নেওয়া। অবশেষে শনিবার রাতে স্বপ্নপূরণ। ৬৪ মিনিটে সরপ্রীতকে তুলেই কিংসলে কোমানকে নামান বায়ার্ন ম্যানেজার হান্স ফ্লিক।
সরপ্রীতের জন্ম নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে। পঞ্জাবের মাহিলপুরের কাছে একটি গ্রামে থাকতেন তাঁর পূর্বসূরিরা। নিউজিল্যান্ডে জন্মালেও ভারতীয় সংস্কৃতির আবহেই বড় হয়েছেন সরপ্রীত। তাঁর আদর্শ বিরাট কোহলি। খোলাখুলি বলেন, ‘‘সময় পেলেই ক্রিকেট দেখি। আমাকে অনুপ্রাণিত করে বিরাটের ধারাবাহিকতা ও নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা। একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেয় বিরাট। দলের সকলকেও নিজের সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।’’