বহুদিনের দুর্ভোগের পর শেষপর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা হবে, বাড়িতে ফিরে প্রথমেই জড়িয়ে ধরবেন চেনা মানুষগুলোকে, হয়তো এমনটা ভেবেই শ্রমিক স্পেশালে উঠেছিলেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক মালদহের বাসিন্দা বুদ্ধ পরিহর। কিন্তু বাড়ি পর্যন্ত আর পৌঁছনো হলো না তাঁর। ট্রেনেই মারা গেলেন হরিশচন্দ্রপুরের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তি। রাজস্থান থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে আসা শ্রমিক স্পেশালের ঘটনা।
শুধু তাই নয়, সহযাত্রী বুদ্ধ পরিহরের মৃতদেহ সঙ্গে নিয়েই প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে সফর করেন ওই ট্রেনে ওঠা অন্য পরিযায়ী শ্রমিকরা, ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে তাঁদের মধ্যেও। ওই প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে একেবারে অকূল পাথারে পড়ল তাঁর পরিবার, স্ত্রী ও দুই সন্তান। পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতেই গত প্রায় ২০ বছর ধরে রাজস্থানের একটি হোটেলে কাজ করতেন বুদ্ধ। তাঁর সঙ্গে একই হোটেলে কাজ করতেন তাঁর ভগ্নীপতি সরযূ দাসও।
লকডাউনের জেরে বুদ্ধ পরিহর ও তাঁর ভগ্নিপতির হোটেলের ওই চাকরিটি চলে যায়। ফলে রাজস্থানে টাকাপয়সার অভাবে নিদারুণ কষ্টের মধ্যেই কাটাতে হচ্ছিল তাঁদের। এই লকডাউনের সময়েই তাঁরা নানাভাবে নিজেদের মালদহের গ্রামে ফেরার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি। অবশেষে ২৯ মে সকাল ১১ টা নাগাদ শ্রমিক স্পেশালে জায়গা হয় তাঁদের। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ ট্রেন যখন উত্তরপ্রদেশের মুঘলসরাইয়ের কাছাকাছি তখনই মৃত্যু হয় বুদ্ধ পরিহরের।