করোনা পরিস্থিতিতে দেশকে আত্মনির্ভর হওয়ার বুলি আউড়েছেন তিনি। মঙ্গলবার আধ ঘন্টার সামান্য বেশি সময়ের বক্তৃতায় তিনি এই শব্দটি মোট ২৮ বার উচ্চারণ করেছেন। আর এর পাশাপাশিই ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা গড় জাতীয় উৎপাদনের ১০ শতাংশ। তবে শুনতে ভারী ভারী লাগলেও, আসলে তা নয়। হিসেব করলে দেখা যাবে, জিডিপির মোটামুটি পাঁচ শতাংশ টাকা এবার বাজারে ঢালবে মোদী সরকার। কারণ এর আগে দু’বার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে। একবার গরিব কল্যাণ প্রকল্পের আওতায় ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা সরকারের পক্ষ থেকে। আর একবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে দফায় দফায় মোট ৮.০৪ কোটি টাকা। এই সব যুক্ত করলে বাকি থাকছে মোটামুটি ১০.২৬ লক্ষ কোটি টাকা। যা কিনা এবারের আর্থিক প্যাকেজ হিসাবে ঘোষণা করলেন মোদী।
প্রসঙ্গত, দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে এখনও পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বেশ কয়েকবার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ২.৮ লক্ষ কোটি টাকার ঘোষণা করেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক, যা গড় জাতীয় উৎপাদনের ১.৪ শতাংশ। মূলত বাজারে নগদের জোগান বাড়াতেই এই অর্থ ঢালা হয়েছিল। গত ২৭ মার্চ আরও একবার নগদের জোগান বাড়াতে ত্রাণ হিসেবে ৩.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা বাজারে ঢালে আরবিআই। যা কিনা জিডিপির ১.৮ শতাংশ। সেই সময়ে শিল্প সংস্থাগুলিকে কম সুদে ঋণের সুবিধা দিতে দীর্ঘমেয়াদি রেপো অপারেশন হিসেবে এক লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে আরবিআই। ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও ১০০ বেসিস পয়েন্ট কম করা হয়, অঙ্কের হিসেবে মোট ১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা ছাড় দেওয়া হয়।
বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির হাতে নগদের জোগান বাড়াতে আরও ১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করে আরবিআই। গত ১৭ এপ্রিল দীর্ঘমেয়াদি রেপো অপারেশনের জন্যে ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। পাশাপাশি নাবার্ড ও সিডবির মতো অব্যাঙ্ক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। সব মিলিয়ে যা কিনা জিডিপির .৫০ শতাংশ। আবার গত ২৭ এপ্রিল মিউচিউয়াল ফান্ডে ৫০ হাজার কোটি টাকা ঢালা হয়, যা জিডিপির .২৫ শতাংশ। গত ২৭ মার্চ কেন্দ্র একটি আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করে। যার পরিমাণ ১.৭ লক্ষ কোটি, জিডিপির .৮৫ শতাংশ। অর্থাৎ কেন্দ্র আর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্যাকেজ নিয়ে ইতিমধ্যেই ৯.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা ঢালা হয়ে গিয়েছে। আর সেক্ষেত্রে এবারের সংযোজন ১০.২৬ লক্ষ কোটি (২০ লক্ষ কোটি থেকে ৯.৭৪ লক্ষ কোটি বিয়োগ করলে)। যা কিনা জিডিপির ৫.২ শতাংশ।