২০১৯ সাল থেকেই মন্দার গ্রাসে দেশের অটোমোবাইল সেক্টর। তবে মনে করা হয়েছিল, গাড়ি বিক্রির চাকা একেবারে বসে গেলেও ২০২০ সালে নিশ্চয় হাল ফিরবে এই শিল্পে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আর তার জেরে দেশজুড়ে লকডাউনের ফলে এখনও রাহুমুক্তি ঘটল না দেশের গাড়ি বাজারের। বরং আরও মারাত্মক প্রভাব পড়েছে গাড়ি শিল্পে। গোটা এপ্রিল মাসে একটিও গাড়ি বিক্রি হয়নি মারুতি সুজুকির। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছে সংস্থা। বলা হয়েছে, সংস্থার ইতিহাসে এক মাসে একটিও গাড়ি বিক্রি না হওয়ার নজির নেই।
উল্লেখ্য, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কজনক হয়ে ওঠার পরে পরেই গত ২২ মার্চ থেকে উৎপাদন থেকে বিক্রি সবই বন্ধ রাখে মারুতি সুজুকি। তবে এই লকডাউনের অনেক আগে থেকেই ভারতের বাজারে গাড়ি শিল্প মন্দার কবলে। ২০১৯ সালের শেষ দিক থেকেই এই শিল্প কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। হিসাব বলছে, গত বছর আগস্ট মাসে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য চার চাকার গাড়ি বিক্রি ৪১ শতাংশ কমে যায়। একই ভাবে কমে যায় ট্রাকের বিক্রিও। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে দেশের অন্যতম বৃহৎ ট্রাক উৎপাদক সংস্থা অশোক লেল্যান্ড গোটা দেশে তাদের বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানায়।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, গাড়ি শিল্পে মন্দা অশনিসংকেত। কারণ, এর সঙ্গে অনুসারী অনেক শিল্প জড়িয়ে। একটা গাড়ি তৈরি করতে ৩০ হাজার বডি পার্টস প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে অনেক কিছুই অনুসারী শিল্প সংস্থায় তৈরি হয়। ফলে গাড়ি শিল্পে মন্দা গ্রাস হলে তা শিল্পক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলতে বাধ্য। আর যেহেতু শুধু মারুতি সুজুকিই নয়, দেশজুড়ে লকডাউনের কারণে ভারতে সব সংস্থারই গাড়ি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে, ফলে মনে করা হচ্ছে, কারখানা থেকে শোরুম, এই ক্ষেত্রের বহু কর্মী কাজ হারাতে পারেন। সংখ্যাটা কয়েক লক্ষও হতে পারে। যদিও শুধু ভারতেই নয়, গোটা বিশ্বেই গাড়ি শিল্পে ছোবল বসিয়েছে করোনা। যেমন গত ফেব্রুয়ারিতেই দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশ্বের সব থেকে বড় গাড়ি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে হুন্ডাই।