সংঘাত চরমে। রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দুটি কেন্দ্রীয় দল এ রাজ্যে এসেছে, তাঁদের মধ্যে কলকাতার দলটিকে সোমবার নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। কেন্দ্রীয় দলের রাজ্যে আসা নিয়েই আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব।
রাজ্য সরকারের মতামত না-জেনে সোমবার সরেজমিনে বাংলার করোনা-পরিস্থিতি দেখতে আসে কেন্দ্রের প্রতিনিধিদল। ‘প্রোটোকল’ মেনে রাজ্যের সাহায্য না-চেয়ে সেই কেন্দ্রীয় পরিদর্শকরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সাহায্য নিয়ে এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। এমনকী, সেই কেন্দ্রীয় দল যে আসছে, তা মুখ্যমন্ত্রীকে বেলা একটায় ফোন করে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিকে সকাল দশটাতেই ওই কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল নেমে পড়ে দমদম বিমানবন্দরে। কেন্দ্রের এই আচরণকে ‘একতরফা এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর’ পরিপন্থী বলে অভিহিত করে তাঁর অসন্তোষ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথমে টুইটারে, তার পর প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যদিও তরজার জল অনেক দূর গড়িয়ে যাওয়ার পর রাজ্য প্রশাসনের মনোভাব বুঝে বিকেলে নবান্নে এসে মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করেন ওই কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দলের কয়েকজন সদস্য। এর আগে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা কেন্দ্রীয় দলটির আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তিনি বলেন, ‘আমরা করোনার বিরুদ্ধে লড়ছি। কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের কোনও ব্যাপার নেই।’ মুখ্যসচিব জানান, তিনি কেন্দ্রের বার্তা পাওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা দমদম বিমানবন্দরে নেমে পড়েন। এসএসবি, বিএসএফকে নিয়ে তাঁরা এলাকা ঘুরে দেখতে চলে যান বলেও ক্ষোভের সুরেই জানান রাজীব। তাঁর কথায়, ‘ওঁরা তো নিজেদের সার্কুলার নিজেরাই লঙ্ঘন করেছে। এ ভাবে আমাদের না-জানিয়ে ফিল্ডে চলে যাওয়া আমরা মেনে নিতে পারছি না।’
কলকাতার গুরুসদয় রোডে অফিসার ইন্সস্টিউটে রয়েছেন কলকাতায় আসা কেন্দ্রীয় দলটির সদস্যরা। এদিন সকালে তাঁরা গাড়ি নিয়ে বেরোলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসতে হয় তাঁদের। শুধু তাই নয়, দুপুরে সেখানেই বৈঠক করতে যান মুখ্যসচিব । ফলে সংঘাত যে ক্রমেই বাড়ছে তা বলাই বাহুল্য।