করোনা ভাইরাসের প্রকোপে গোটা বিশ্বই এখন প্রায় অচল। যার ফলে চলতি আর্থিক বছরে গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ৩ শতাংশ কমবে। এদিন এমনই সতর্কবার্তা দিল আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার। আজ আইএমএফ তাদের বক্তব্যে সাফ জানিয়েছে, গোটা বিশ্ব আবার একটি অতিমন্দার দিকে যাচ্ছে। ১৯৩০ সালের পর এমন অর্থনৈতিক মন্দা আর কখনও দেখেনি পৃথিবী। এই সঙ্কট যত দীর্ঘায়িত হবে, বিভিন্ন দেশের সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলোকে তত কঠিন পরীক্ষার মধ্যে পড়তে হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ।
করোনা আতঙ্কে বর্তমানে থমকে গিয়েছে গোটা বিশ্ব। ব্যতিক্রম নয় ভারতও। ইতিমধ্যে গোটা বিশ্বে এক লক্ষেরও বেশি প্রাণহানি ঘটিয়েছে নোভেল করোনা ভাইরাস। আক্রান্ত প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, চীন ও জাপানের মতো অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী দেশগুলি। যোগাযোগ ব্যবস্থা, কলকারখানা বন্ধ। উৎপাদন বন্ধ। আর এটাই বিশ্বকে আরেকটি অতিমন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।
আইএমএফের সাম্প্রতিকতম ওয়ার্ল্ড ইকনমিক আউটলুকে বলা হয়েছে, ‘এটা এখন স্পষ্ট যে ১৯৩০ এর দশকের অতিমন্দার পর সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দার সামনে দাঁড়িয়ে পৃথিবী। এটা এক দশক আগের অর্থনৈতিক সঙ্কটকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। এই লকডাউন বিশ্বের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির রাশ নাটকীয়ভাবে টেনে ধরবে।’ আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ বলছেন, ‘এই সঙ্কটে বিশ্ব আগামী দুই বছরে ৯ ট্রিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি হারাবে। এই অঙ্ক জার্মানি ও জাপানের মতো দুই শিল্পোন্নত দেশের মোট জিডিপির পরিমাণের চেয়েও বেশি।’
মনে করা হচ্ছে, গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে অতিমন্দার প্রভাব প্রায় সবকটি দেশের অর্থনীতিতেই পড়বে। এমনই সতর্কবার্তা দিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার জানিয়েছে, করোনা মোকাবিলায় সফল হলেও এই মন্দা আটকানো সম্ভব না। বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশের বেশি হবে না। আইএমএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে মন্দার পর বিশ্বে অর্থনীতি ০.৭ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল। এবার তা হতে যাচ্ছে ৩ শতাংশ। পাশাপাশি আইএমএফ-র পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, এই মারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যদি আটকানো না যায়, তাহলে আগামী বছরে বিশ্বের আরও খারাপ অবস্থা হবে।