লকডাউনে আটকে পড়া বেহালার এক আবাসিক ব্লাইন্ড স্কুলের ৯৬ পড়ুয়াকে খাবার পাঠালেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি ঝাড়খন্ডের ওই দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের সঙ্গে তাঁদের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও রয়েছেন। সব মিলিয়ে হোস্টেলে থাকা ১১২ জন কার্যত অভুক্ত থাকার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে খবর পৌঁছতেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম মারফত ওই ব্লাইন্ড স্কুলে পাঠিয়েছেন চাল-ডাল-তেলের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেহালার জোকা কবরডাঙার ডি এফ ব্লাইন্ড স্কুলের সম্পাদক যাবেশ দত্ত মুখ্যমন্ত্রীকে ইমেল করেন। সেখানে তিনি জানান, দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের কার্যত অভুক্ত থাকার উপক্রম হয়েছে। জানান, লকডাউনের জেরে গত ২০ মার্চ থেকে হস্টেলে আটকে ৯৬ জন দৃষ্টিহীন ছাত্রছাত্রী। স্কুলে দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের পড়ুয়ারা লকডাউন শুরুর আগেই বাড়িতে ফিরে গেলেও উত্তরবঙ্গ ও ঝাড়খন্ডের ছাত্রছাত্রীরা আটকে পড়েছেন। স্কুলটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালায়। স্কুলের প্রিন্সিপাল কাবেরী দাস ও হস্টেল সুপার নমিতা ভট্টাচার্য পড়ুয়াদের নিয়ে খুবই সংকটে পড়েন। সংস্থার সম্পাদক মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, লকডাউনের কারণে সংস্থাকে সাহায্য করার জন্য কোনও বন্ধু বা দাতা আসতে পারছেন না। আর মাত্র দিন ছয়েকের খাদ্যসম্ভার জমা আছে। খাবার কেনার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই স্কুলের তহবিলে। খবর পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে দ্রুত খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। রাতেই মেয়র ওই স্কুলে পর্যাপ্ত পরিমানে চাল, ডাল, তেল পৌঁছে দেন।
মেয়র ব্লাইন্ড স্কুলের শিক্ষকদের জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আরও খাবার পরে পাঠানো হবে। পর্যাপ্ত খাদ্যসম্ভার পেয়ে আবেগাপ্লুত ব্লাইন্ড স্কুলের সম্পাদক যাবেশ দত্ত জানিয়েছেন, ‘করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী নজিরবিহীন পরিশ্রম করছেন। কিন্তু তার মধ্যেও আমরা ইমেল পাঠানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যে যেভাবে নিজেই তৎপর হয়ে দৃষ্টিহীনদের জন্য খাবার পাঠিয়েছেন তা সত্যিই নজিরবিহীন। মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই।’ এদিন বর্ধমানের এক রোগীকেও কলকাতা থেকে ওষুধ পাঠিয়েছেন মেয়র। পুলিশ মারফত কলকাতার পার্কসার্কাস থেকে ওষুধ কিনে বীরভূমের ময়ূরেশ্বরে এক ক্যানসার আক্রান্তকে পাঠান ফিরহাদ। শনিবারই ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে ওই দুই রোগীর পরিবারের তরফে ফিরহাদকে ফোন করে আর্তি জানানো হয়।