কয়েক দিন আগেই এনআরসি-সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার অভিযোগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনরত আফসারা অনিকা মিম নামের এক বাংলাদেশী পড়ুয়াকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল মোদী সরকারের বিদেশ মন্ত্রক। এবার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় ফের কেন্দ্রের খাঁড়া নেমে এল এক বিদেশি ছাত্রের ওপর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের স্নাতকোত্তর স্তরের এক পোলিশ ছাত্রকে অবিলম্বে ভারত ছেড়ে তাঁর নিজের দেশ পোল্যান্ড ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস বা এফআরআরও। গত ২৪ তারিখ কলকাতায় এফআরআরও–র অফিসে গেলে কামিল সিডিনস্কিকে ভারত ছাড়ার নোটিস ধরানো হয়। নোটিস হাতে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তাঁকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কামিল ওই নির্দেশ অগ্রাহ্য করেন, তাহলে ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকের উপযুক্ত শাস্তি পাবেন তিনি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে নোটিসে।
এ ব্যাপারে কামিলের কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও যাদবপুরের অধ্যাপক মহল এবং ছাত্রছাত্রীদের মতে, ভারতের কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক না হলেও, শুধু মানবিকতার খাতিরে গত ডিসেম্বরে মৌলালিতে আয়োজিত সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্যই এই বিপদে পড়তে হল তাঁকে। ওই মিছিলে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিল একটি বাংলা দৈনিক। পরদিন সেই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হলে পর কেউ কেন্দ্রকে সেটা উল্লেখ করে এবং তারপর কেন্দ্র এফআরআরও–কে ওই নির্দেশ দেয় বলেই মনে করছেন অধ্যাপক এবং ছাত্রছাত্রীরা। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই কামিল ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে উৎসাহী। এর আগে তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা এবং সংস্কৃত নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। এ বছর তুলনামূল সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ভারত ছাড়তে হওয়ায় সেই পরীক্ষাই তিনি দিতে পারবেন না।