নিম্নমানের সুতো। আর সেজন্যই ১০দিনের সদ্যজাতকে তিন -তিনবার অস্ত্রোপচার করল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর তারই পরিণতি মৃত্যু। ধকল সামলাতে না পেরেই মৃত্যু হয়েছে শিশুর। মর্মান্তিক এ ঘটনা এনআরএসের। মলদ্বার না থাকায় বাদুড়িয়ার শিশুকে এনআরএস-এর শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার চিকিত্সক অস্ত্রোপচার করেন। কিন্তু, নিম্নমানের সুতো দিয়ে সেলাই করার কারণে বার বার সুতো ছিঁড়ে যায়।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এনআরএস হাসপাতালে প্রথমবার খুদের অস্ত্রোপচার হয়। তারপর ২২ ফেব্রুয়ারি এবং ২৬ ফেব্রুয়ারিও অস্ত্রোপচার করা হয় একরত্তির। কিন্তু কেন তিনবার একই ক্ষতস্থানে অস্ত্রোপচার করা হল ওই সদ্যোজাতের? শিশুর পরিবারের দাবি, এনআরএসের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা তাঁদের পরিবারের ছোট্ট সদস্যের অস্ত্রোপচার করেছেন। বারবারই সুতো ছিঁড়ে গিয়েছে। তাই তৃতীয়বার অস্ত্রোপচারের সময় বাইরে থেকে সুতোও কিনে আনতে বলেন চিকিৎসকরা। সেই অনুযায়ী সুতো কিনেও এনে দেওয়া হয়। তবে তৃতীয়বার অস্ত্রোপচারের পর থেকেই তার ক্ষতস্থান দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। ক্রমশই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছিল খুদে। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ধকল সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয় একরত্তির। তাঁদের অভিযোগ, সম্ভবত নিম্নমানের সুতো ব্যবহারের ফলে সেপটিক হয়ে গিয়েছিল। তাই মৃত্যু হয়েছে দশদিনের ওই শিশুর।
হাসপাতালের এক কর্তা জানান, “রোগীর পরিবারকে সুতো কিনে দিতে বলা হচ্ছে। এটা বেআইনি। কিন্তু এই মুহূর্তে বিভাগে থাকা সুতো দিয়ে সেলাই করলেই তা ছিড়ে যাচ্ছে। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।” তিনি জানান, “কোন সংস্থা সুতো সাপ্লাই করেছে তা খুঁজে দেখা হচ্ছে।”
শিশুমৃত্যুর পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছেন তার পরিজনেরা। ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। কেন একই ক্ষতস্থানে পরপর তিনবার সেলাই করলেন চিকিৎসকরা, উঠছে সেই প্রশ্ন। এছাড়াও কেন অস্ত্রোপচারের পর সেলাই করার সময় নিম্নমানের সুতো ব্যবহার করা হল, ইতিমধ্যে সেই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। সাধারণত, অস্ত্রোপচারের পর সেলাই করার জন্য প্রয়োজনীয় সুতো হাসপাতালেই মজুত থাকে। তা সত্ত্বেও কেন শিশুর পরিজনদের সুতো কিনে আনার কথা বলা হল, সেই প্রশ্নও উঠছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র শিশুর প্রাণরক্ষার তাগিদেই সেলাইয়ের সুতো কিনে দিতে বলা হয়েছিল পরিজনদের। যে সংস্থা সুতো সরবরাহ করে, এই ঘটনার পর তাদের খোঁজ চালাচ্ছে এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।