গত কয়েকদিন ধরে চলতে রাজধানীর হিংসা নিয়ে বুধবারই দিল্লী পুলিশকে তুলোধোনা করেছিলেন তিনি। তাঁর একের পর এক প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে যায় দিল্লী পুলিশ। মুখে রা-কাড়ার মতো অবস্থা ছিল না তাদের। কার্যত বুধবার কাউকেই রেয়াত করেননি দিল্লী হাই কোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধর। বুধবার তাঁর এজলাসে দিল্লী হিংসা মামলার শুনানি চলার সময় দিল্লী পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রকেও একহাত নেন তিনি। তবে তারপরই তড়িঘড়ি তাঁকে বদলি করা হয় পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে। আর তা নিয়েই এখন সরগরম জাতীয় রাজনীতি। মুরলীধরের বদলি নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের উদ্দেস্যে তোপ দেগেছে কংগ্রেস। যদিও পাল্টা বিজেপি বলছে, রুটিন বদলি হয়েছে ওই বিচারপতির।
বৃহস্পতিবার সাতসকালেই সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এই অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারই এই বদলির জন্য কলকাঠি নেড়েছে। এদিন দলের তরফে তিনি এই প্রশ্নও তুলেছেন যে, ন্যায় পালন করলে কি এবার কোনও বিচারপতিকেও ছাড় দেওয়া হবে না? সুরজেওয়ালা বলেন, ‘২৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লী হাইকোর্টের বিচারপতি মুরলীধর এবং তলবন্ত সিংয়ের বেঞ্চ দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়া বিজেপি নেতাদের চিহ্নিত করে তাদের পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। অন্যদিকে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা হাইকোর্টে ভিডিও দেখা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করে বলেন যে এটা তদন্ত করার সঠিক সময় নয়। আর এই নির্দেশ দেওয়া কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই বিচারপতির বদলি পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টের করে দেওয়া হল।’
এখানেই থেমে না থেকে কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে আরও তিনটি মোক্ষম প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন সুরজেওয়ালা। তাঁর প্রথম প্রশ্ন, ‘আপনারা কি এই ভয় পেয়েছিলেন যে যদি আপনার দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত হয় তবে পুরো ঘটনায় আপনাদের ভূমিকার পর্দাফাঁস হয়ে যাবে? তাঁর দ্বিতীয় প্রশ্ন, ‘নিরপেক্ষ এবং প্রভাবশালী ন্যায় দেওয়ার থেকে আটকাতে আপনারা কতজন বিচারপতির বদলি করবেন?’ এবং কংগ্রেসের শেষ প্রশ্ন, ‘আপনারা কি কোনও ভাবে নিজেদের নেতাদের বয়ানকে সমর্থন করার চেষ্টা করছিলেন যার কারণে যেই বিচারপতি তদন্তের নির্দেশ দিলেন তাঁকে আপনারা বদলি করে দিলেন?’ যদিও টুইটারে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সাফাই, ১২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের কোলেজিয়ামের করা সুপারিশ মতই বিচারপতির বদলির নির্দেশ জারি করা হয়েছে।