সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কলকাতা সফর কালে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে রাজ্যের বকেয়া টাকার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে যে বিশেষ সুবিধা হয়নি তা বিধানসভায় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর বাজেট বক্তৃতায় আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। এবার অন্য পথ না খুঁজে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের বকেয়া টাকা চেয়ে সরাসরি চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদীকে লেখা চিঠিতে মমতা লেখেন, বিভিন্ন খাতে রাজ্যের ৫০ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। সেই টাকাই এবার চেয়েছেন তিনি।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে আপনাদের জানাচ্ছি যে, কেন্দ্রের দেওয়া টাকার পরিমাণ দিন দিন কমছে। যা পাওয়া যাচ্ছে, তাও আসছে অনেক দেরি করে। এর ফলে নানা জনকল্যাণমূলক কাজ করতে অত্যন্ত সমস্যা হচ্ছে। কেন্দ্রের তরফে প্রাপ্য টাকা না পেয়ে আটকে যাচ্ছে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজও। তাই রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে যেন দ্রুত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হয়।’
সর্বোপরি মুখ্যমন্ত্রী এই চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, কেন্দ্রীয় সরকার এখন কর বাবদ অর্থ সংগ্রহের বদলে ক্রমশ সেস ও সারচার্জের ওপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। ২০১৪-১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের মোট রাজস্বের ৬.১৭ শতাংশ আসত সেস থেকে। ২০১৯-২০ সালে সেস বাবদ আদায় হয়েছে রাজস্বের ১৮.৪ শতাংশ। রাজ্য সরকার সেস বাবদ আদায় করা অর্থের ভাগ পায় না। এইভাবে কেন্দ্রের থেকে রাজ্যের প্রাপ্য টাকার পরিমাণ কমছে।
রাজ্য বাজেট পেশ করার পর কেন্দ্রের কাছে প্রাপ্য টাকার অঙ্ক জানিয়ে, সেই টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন বাংলার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছিলেন কোন কোন খাতে কেন্দ্রের কাছে রাজ্য সরকার কত টাকা পায়। কোনো প্রত্যুত্তর না পেয়ে এবার মোদীকে চিঠি লিখেও একই দাবি জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। অনেকের মতে, একুশের ভোটের আগে কৌশলগত ভাবেই হয়ত রাজ্যের সঙ্গে আর্থিক বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। যাতে বাংলায় প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তীব্র হয়। তবে সেরকম পরিস্থিতি যাতে না আসে, তা রোধ করতে প্রথম থেকেই তৎপর রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।