সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় প্রায় দেড় মাসের বেশি সময় ধরে সিএএ-বিরোধী অবস্থান চলছে দিল্লীর শাহিনবাগে। দিল্লীর বিধানসভা ভোটের আগে যা নিয়ে বেজায় চাপে পড়তে হয় বিজেপিকে। নির্বাচনী প্রচারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ- সকলের ভাষণেই উঠে এসেছে শাহিনবাগ আন্দোলন নিয়ে নানা হুঁশিয়ারি, বিতর্কিত মন্তব্য। কিন্তু আজ ভোটের ফলে বিজেপি যোগ্য জবাব পেলেও রাজনীতি থেকে শতহস্ত দূরেই থাকছেন, অন্তত থাকতে চাইছেন সেখানের আন্দোলনকারীরা। হ্যাঁ, দিল্লী বিধানসভার ভোটের ফলাফলের দিন তাই প্রতিবাদের জ্বলন্ত ক্ষেত্র শাহিনবাগ একেবারে নিশ্চুপ। কে জিতলেন, কে-ই বা হারলেন, সেসব নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ আন্দোলনকারীরা। আজ সেখানে নীরব প্রতিবাদ। আজ মুখে কালো কাপড় বেঁধে, হাতে পোস্টার নিয়ে মঞ্চ হাজির তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ওখলা বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই শাহিনবাগ। সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমে দেশের মানচিত্রে নিজের নাম তুলে ধরেছে রাজধানীর এই স্থানটি। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহারের জোরদার দাবিতে গত দেড় মাস ধরে চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। যা নিয়ে রাজনীতিও হয়েছে বিস্তর। শাহিনবাগে সশরীরে হাজির হয়ে কেউ আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তো কেউ আবার তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে এই প্রতিবাদের ধরণকে। দিল্লী বিধানসভার ভোটে অন্যতম ফ্যাক্টর ছিল শাহিনবাগের সিএএ বিরোধী আন্দোলন। ভোটের আন্দোলনের কেমন প্রভাব পড়ে, সেদিকে নজর ছিল রাজনীতিক থেকে আমজনতা – সকলেরই। প্রভাব অবশ্যই পড়ল। কিন্তু তা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়াই দিতে চাইলেন না কোনও আন্দোলনকারী।
সকলেই এই নীতিতে একমত যে বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফলের অঙ্ক নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই। তাঁদের আন্দোলনের মূল কেন্দ্রে শুধু সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। দাবি একটাই, সেই আইনটি প্রত্যাহার। আজকের দিনেও তাঁরা অন্য কোনও কিছুর দিকে তাকাবেন না, অন্য কিছু নিয়ে ভাববেন না। বরং মুখ খুলতে যাতে না হয়, তার জন্য আন্দোলনকারীরা ঘোষণা করে দিয়েছেন ‘নীরব প্রতিবাদ’। মুখে কালো কাপড়, হাতের পোস্টারে লেখা – সাইলেন্ট প্রোটেস্ট। তুলনায় আজকের দিনে শাহিনবাগ চত্বরে ভিড়ও অনেক কম। যেখানে এতগুলো দিন ধরে আন্দোলনের চাপে রাস্তা বন্ধ, যাতায়াতে সমস্যা, কারও প্রবেশ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল, আজ সেখানে বেশ ফাঁকা। অনায়াসেই প্রবেশ করা যাচ্ছে আন্দোলনস্থলে।