তবে কি মোদী সরকারের নির্দেশে ধীরে ধীরে বাজার থেকে দু’হাজার টাকার নোট তুলে নিচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক? এবার আবারও এই প্রশ্ন উঠে গেল অনলাইন ব্যবসায়িক নিউজ পোর্টাল বিজনেস ইনসাইডার ইন্ডিয়া এক রিপোর্টে। গ্রাহকরা টাকা তুলতে এলে তাঁদের দু’হাজার টাকার নোট দিতে বারণ করে কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে দেশের একটি বৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের নাম উল্লেখ না করে ওই ব্যাঙ্কের নিচুতলার কর্মীদের শীর্ষ কর্তৃপক্ষের পাঠানো এক ই-মেলে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিজনেস ইনসাইডার ইন্ডিয়া এক রিপোর্টে জানিয়েছে।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যাঙ্কের এটিএমগুলিতেও দু’হাজার টাকার নোট ভরতে মানা করা হয়েছে ওই ই-মেলে। তবে, গ্রাহকরা যদি ব্যাঙ্ক দু’হাজার টাকার নোট জমা দেন তবে সেই নোট নিতে কোনও রকম নিষেধনামা পাঠানো হয়নি। অর্থাৎ, গ্রাহকরা দু’হাজার টাকার নোটে তাঁদের আমানত ওই ব্যাঙ্কে জমা করতে পারেন। ওই ই-মেল বা তথ্যের সত্যতা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে, এই খবর দু’হাজার নোট তুলে নেওয়ার জল্পনাকে জোর উস্কে দিয়েছে সন্দেহ নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর মাঝরাত থেকে দেশে পুরোনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাতিল ঘোষণার পর বেগুনি রংয়ের নতুন দু’হাজার নোট বাজারে আনে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)। কিন্তু, গত বছর বাজারে দু’হাজার টাকার নোটের সংখ্যা (সার্কুলেশন) কমিয়ে আনে আরবিআই। ২০১৭ সালে ৩২৮.৫ কোটি এবং ২০১৮ সালে ৩৩৬.৩ কোটি দু’হাজার টাকার বাজারে ছিল। ২০১৯ সালে ওই সংখ্যা কমে আসে ৩২৯.১ কোটিতে। অর্থাৎ, ২০১৮ থেকে ২০১৯ এর মধ্যে ব্যাঙ্ক ব্যবস্থায় জমা পড়া ৭.২ কোটি দু’হাজার টাকার নোট বাজারে ফিরে আসেনি।
একটি আরটিআই (তথ্য জানার অধিকার আইন) প্রশ্নের উত্তরে আরবিআই জানিয়েছে, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের টাকশালগুলিতে দু’হাজার টাকার নোট ছাপানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অবশ্য এর কোনও কারণ ব্যাখ্যা দেয়নি। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘বাজার থেকে দু’হাজার টাকার নোট ধীরে ধীরে তুলে নেওয়ার আর একটা বড় কারণ হতে পারে অর্থনীতিতে জাল দু’হাজার টাকার নোটের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকা।’
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সারা দেশে মোট যত জাল নোট ধরা পড়েছিল মূল্যের হিসাবে তার ৫৩.৩ শতাংশই ছিল দু’হাজার টাকার নোটে। ২০১৮ সালে ধরা পড়া জাল দু’হাজার টাকার নোটের অনুপাত বেড়ে দাঁড়ায় ৬১.০১ শতাংশ! ‘এই পরিসংখ্যান থেকেই পরিষ্কার, দু’হাজার টাকার নোট জাল করা কতটা সহজ,’ ব্যাঙ্ক আধিকারিকটি বলেন।