মহেশতলা, বজবজ ও ডায়মন্ড হারবার পুরসভার নিজেদের আসন ধরে রাখা নিয়ে তৃণমূল সাংগঠনিক ভাবে যতটা সক্রিয়, তুলনায় একেবারেই পিছিয়ে বিজেপি। পুরসভার ওয়ার্ড ধরে ধরে নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া থেকে শুরু করে শাসক দলের বিরুদ্ধে পাল্টা জনমত তৈরি নিয়ে বিজেপিকে সেভাবে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন ফাইনাল ম্যাচ হলে, চলতি বছরের পুরসভার নির্বাচনগুলি হল সেমিফাইনাল। তাই সেমিফাইনালের আগেই সংগঠনের এমন ঢিলেঢালা ভাব থাকলে ফাইনালের সময় কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে খোদ গেরুয়া শিবিরের অন্দরেই।
পদ্ম শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভা নির্বাচনে বিজেপির শক্তি বৃদ্ধির জন্যই গত কয়েক মাস ধরে দলের কেন্দ্র থেকে রাজ্য সমস্ত স্তরের সংগঠন ভেঙে নতুন করে তৈরির কাজ চলছে৷ সেইজন্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগণা প্রশাসনিক জেলাকে ভেঙে প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগণা পূর্ব এবং পশ্চিম করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর দক্ষিণ ২৪ পরগণা পশ্চিমকে ভেঙে আবার মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রকে আলাদা করা হয়। এবং তিনমাস আগে ৩ জেলাতেই নয়া সভাপতি নিয়োগ করা হয়। নয়া জেলার সভাপতি হন উমেশ দাস। ডায়মন্ড হারবার, মহেশতলা ও বজবজ তিনটি পুরসভার প্রার্থী মনোনয়ন থেকে বাকি সব কাজ তাঁর নেতৃত্বেই হবে।
শোনা যাচ্ছে, তিনমাস আগে দলের দায়িত্ব গ্রহণ করলেও উমেশকে সেভাবে পাচ্ছেনই না দলের লোকজন। পুরভোটে লড়াই কী ইস্যুতে হবে, তারও কোনও দিশা দিতে পারেননি তিনি। কারণ তিনি ওইসব জায়গাতে সেভাবে যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। দলের অনেকেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলছেন, কোথাও কোনও আন্দোলন করতে গেলে শাসক দলের চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু তা প্রতিরোধ করার মত সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখাতে পারেননি জেলা সভাপতি।
দলের একটি সূত্রের এমনও দাবি, জেলা সভাপতি হিসেবে যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি এর আগে জেলা জুড়ে কোনও কাজই করেননি। মহেশতলার মন্ডল কমিটির সভাপতি ছিলেন। তাও সেখানে সংগঠনকে বাড়াতে পারেননি। জেলার বিজেপি কর্মীদের সকলের মুখেই প্রায় একই কথা, জেলায় যেখানে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত প্রভাবশালী সাংসদ রয়েছেন, সেখানে অনভিজ্ঞ এমন একজনকে সভাপতি করা হয়েছে, যাঁর দক্ষত ও সাহসিকতা দুটোই নেই।