গত ২ বছরের ন্যায় এবারও বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্ক মেলা প্রাঙ্গণে উদ্বোধন হল ৪৪তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। এবছর বইমেলা পা দিল চুয়াল্লিশ বছরে। এ বছর মেলার থিম কান্ট্রি রাশিয়া। মেলা চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এদিন মেলা প্রাঙ্গণের এসবিআই অডিটোরিয়ামে ঠিক সন্ধ্যা ছ’টায় শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্টজন এবং অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয় উত্তরীয় পরিয়ে এবং স্মারক উপহার দিয়ে। অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন ভারতে রাশিয়ার দূত নিকোলাই নিসাতোভিচ সহ সে দেশের যশশ্বী লেখক ইউজেন, হাডিন প্রমুখ। এ ছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। মন্ত্রীদের মধ্যে সু্ব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রমুখ। হলে উপস্থিত দর্শকমণ্ডলীর মধ্যে দেখা গেল সুবোধ সরকার প্রমুখ।
সাহিত্যিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির হাতে সিইএসসি সৃষ্টি সম্মান তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরস্কারের প্রতিক্রিয়ায় নৃসিংহপ্রসাদ জানান, পুরস্কারপ্রাপ্তির বিষয়টি নিঃসন্দেহে উপভোগ করছি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে জানান, তাঁর অশেষ কৃতজ্ঞতার কথা। বলেন, তিনি যে চার খণ্ডে ‘পুরাণকোষ’ লিখছেন, সেটা সম্ভব হত না মমতার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ছাড়া। তিনি যখন এই প্রকল্পের কথা মমতাকে প্রথম বলেন, বিন্দুমাত্র কালক্ষেপ না করে মমতা এর জন্য অর্থবরাদ্দ করেন।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বার বার বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাংলার নিবিড় সম্পর্কের কথা। বলেন রবীন্দ্রনাথের কথা, বিভিন্ন ভাষার সাহিত্য বাংলায় অনুবাদ ও চর্চার একান্ত প্রয়োজন নিজেদের সমৃদ্ধ করার জন্য। এদিনের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন যুব সমাবেশ উপলক্ষে তাঁর একাধিক বার রাশিয়ায় যাওয়ার কথা। লক্ষণীয়, এনআরসি এবং সিএএ-র মত স্পর্শকাতর প্রসঙ্গের উল্লেখ সরাসরি না করলেও বিভিন্ন ভাষায় রচিত সাহিত্য-সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক আদানপ্রদান এবং মতবিনিময় যে অত্যন্ত জরুরি, সেটি সহজ-সরলভাবে বুঝিয়ে দেন তিনি। মেলা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ এবং কর্তৃপক্ষের সক্রিয় উদ্যোগের বিষয়টি তুলে ধরেন মমতা। জানালেন, মূল অনুষ্ঠানের আগে আগত রুশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে রাজ্যে নতুন শিল্পোদ্যোগের ব্যাপারে।
অনুষ্ঠানের একদম শেষপর্বে প্রকাশিত হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৩টি বই। এ বারে প্রকাশিত বইগুলি ধরে তাঁর মোট বইয়ের সংখ্যা দাঁড়াল ১০১টি। গিল্ডের তরফে প্রকাশ করা হয়, বুকস ইন প্রিন্ট এবং ক্যালেন্ডার। অনুষ্ঠানটি শেষ হয় অ্যাডামাস স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের গাওয়া দু’দেশের জাতীয়সঙ্গীত দিয়ে।