এ এক স্বপ্নপূরণের কাহিনী। মেধা, অধ্যবসায় এবং হার না মানা জেদকে সঙ্গী করেই বর্ধমানের ইমামের মেয়ে শামিমা খাতুন পাড়ি দিচ্ছেন লন্ডনে। গর্বিত করছে গোটা বাংলাকে। অনেক অভাব অনটন সামলে নিজের জেদকে সঙ্গে করেই স্বপ্নপূরণ করেছেন শামিমা। তার নিজের থিসিস পেপার পড়তে লন্ডন পাড়ি দিচ্ছেন এই বঙ্গকন্যা। তাঁকে বিশেষ ট্রাভেল গ্রান্ট দিয়ে বিদেশের পাঠাচ্ছে নেচার জার্নাল।
শামিমা রসায়ন নিয়ে স্নাতক আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেখান থেকেই রসায়নে মাস্টার্স। তারপর ডক্টরেট ডিগ্রি। বর্তমানে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়তেই রসায়নের অধ্যাপিকা শামিমা। অধ্যাপনার পাশাপাশি পড়াশোনাও চলছে জোরকদমে। দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসআইআরের একটি প্রজেক্ট নিয়ে গবেষণাও করছেন তিনি।
বিশ্বের অন্যতম সেরা বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার’ প্রতি বছরই সেরা গবেষণাপত্রের জন্য ট্রাভেল গ্রান্ট দেয়। কেবলমাত্র জীববিদ্যা, পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন—মূলত এই তিনটি বিষয়ে গবেষণাকারীদের জন্যই এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
২৯ বছরের শামিমার লক্ষ্য, দেশের মানুষজনের জন্যই কাজ করা। গ্রামের পিছিয়ে পড়া মহিলা, শিশুদের জন্য কাজ করতে চান তিনি। তাঁর কথায়, “অভাবের কষ্ট জানি। লড়াই করে বাঁচার জেদ কেমন হয় জানি। তাই প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলা ও শিশুদের জন্য কাজ করতে চাই। তাদের লড়াইয়ে সঙ্গী হতে চাই আমিও।”
পূর্ব বর্ধমানের নিশ্চিন্তপুরে বাড়ি শামিমাদের। বাবা শেখ রহমত আলি মসজিদের ইমাম। কাছের গ্রাম খেজুরহাটিতে একটি স্টেশনারি দোকানও আছে রহমতের। রহমত নিজেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতক। অভাবের কারণে উচ্চশিক্ষা হয়নি। তবে সেই খামতি মেয়ের জীবনে আসতে দেননি রহমত। যত অনটনই থাকুক, মেয়ের পড়াশোনার দিকে ছিল তাঁর কড়া নজর।