কে কী খাচ্ছেন অর্থাৎ কোনও মানুষের খাদ্যাভাস দেখেই তিনি বলে দিতে পারেন সে বাংলাদেশি কিনা! হ্যাঁ, এবার এমনই দাবি করে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
বৃহস্পতিবার সিএএ-র সমর্থনে একটি সেমিনারে যোগ দিতে গিয়েছিলেন এই বিজেপি নেতা। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই তিনি জানান, সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে যে নির্মাণকাজ হয়েছে, তার শ্রমিকদের কয়েকজনকে তাঁর বাংলাদেশি বলে মনে হয়েছে। খাওয়ার ‘অদ্ভুত’ অভ্যেস দেখেই নাকি তিনি ধরে ফেলেছেন যে ওই শ্রমিকরা বাংলাদেশি। কিন্তু কী এমন খাবার, যা দেখে বলে দেওয়া যায় শ্রমিকদের দেশের নাম? জানা গেছে, সে খাবারটি হল চিঁড়ে। শ্রমিকদের চিঁড়ে খেতে দেখেই তাঁরা এ দেশের বাসিন্দা নয় বলে নাকি নিশ্চিত হয়ে যান তিনি। তাঁর দাবি, যে শ্রমিকরা চিঁড়ে খায় তাঁরা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী।
গতকাল বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে একটা নতুন ঘর তৈরি হচ্ছে। সেখানে কিছু মিস্ত্রি কাজ করতে আসেন। ওঁরা একটা অদ্ভুত জিনিস খাচ্ছিলেন, চিঁড়ে। যা দিয়ে তৈরি হয় পোহা। আমার খুবই সন্দেহ হচ্ছিল, মনে হচ্ছিল এরা বাংলাদেশ থেকে এসেছে। দুদিন আমার সন্দেহ হয়েছে এরপর আমি কাজ করানোই বন্ধ করে দিয়েছি।’ শুধু তাই নয়, ওই খাবার দেখে তৎক্ষণাৎ বিল্ডিং কনস্ট্রাক্টর এবং সুপারভাইজরের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তাঁদের কাছে জানতে চান মিস্ত্রিরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন কিনা।
বিজেপি নেতা আরও বলেন, ‘আমি এখনও পুলিশে কিছু জানাইনি। আমি শুধু এই বিষয়টি সকলকে জানালাম যাতে সবাই সতর্ক থাকে। গত দেড় বছর ধরেই বাংলাদেশি জঙ্গিদের চোখে চোখে রাখি। আমি যখন বাড়ির বাইরে পা রাখি ছ’ জন নিরাপত্তারক্ষীকে সবসময় পাহারা দিতে হয়।’
এসব কথা বলার পরে কৈলাস অবশ্য জানান, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। এই আইনটি আসল শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবে এবং যারা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর তাদের আলাদা করে দেবে। সেই ক্ষতিকরদের তালিকায় কি তাঁর বাড়িতে কাজ করতে আসা, চিঁড়ে খাওয়া ‘বাংলাদেশি শ্রমিক’রা রয়েছেন? সে উত্তর অবশ্য উহ্যই থেকেছে। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর সাফাই, ‘মানুষকে সতর্ক করার জন্যই আমি এই ঘটনার উল্লেখ করছি। আমি এখনও পুলিশে কোনও অভিযোগ জানাইনি।’