গতকাল বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ডার্বিতে মুখোমুখি হয়েছিল ম্যাঞ্চেস্টারের দুই শ্রেষ্ঠ ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। আর সেই ডার্বিতে পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যাঞ্চেস্টারই রীতিমতো রোলার চালালো সোলসারের দলের উপর। লিগ কাপের সেমিফাইনালে ম্যান সিটি ৩-১ উড়িয়ে দিল ম্যান ইউকে। দুর্ধর্ষ গোল করে নায়ক বার্নার্দো সিলভা। রিয়াদ মাহরেজের সুন্দর ফিনিশিং এবং আন্দ্রেয়া পেরেরার গোল ফাইনালের রাস্তা অনেকটাই পরিষ্কার করে রেখেছে সিটির জন্য।
ম্যান ইউয়ের হয়ে কিছুটা সম্মান পুনরুদ্ধার করেন এই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা মার্কাস র্যাশফোর্ড। ম্যাচ শেষ হওয়ার কুড়ি মিনিট আগে গোল করে ব্যবধান কমান তিনি। কিন্তু তার পরে ২৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় লেগের জন্য ম্যান ইউয়ের সামনে পাহাড়প্রমাণ লড়াই থাকছে। ১-৩ ফলের খামতি মিটিয়ে ফাইনালের দরজা খোলা প্রায় অসম্ভবই দেখাচ্ছে। বিশেষ করে এইমুহূর্তে পল পোগবার অস্ত্রোপচার-সহ নানা সমস্যায় জেরবার ম্যান ইউনাইটেড।
মাত্র মাসখানেক আগেই সোলসারের দল কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবলে উড়িয়ে দিয়েছিল গুয়ার্দিওলার ম্যান সিটিকে। সেই হারের ধাক্কায় কার্যত লিভারপুলকে টপকে ইপিএল জেতার স্বপ্নই শেষ হয়ে গিয়েছে সিটির। গুয়ার্দিওলা এখন বাকি ট্রফি জেতার উপরেই তাই নজর দিয়েছেন। ঘরোয়া টুর্নামেন্ট এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগই এখন লক্ষ্য তাঁর। এই ম্যাচের জন্যও তাই প্রায় প্রথম দলই নামান তিনি। শুধু সের্জিয়ো আগুয়েরো এবং গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে তিনি বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু সিটির আক্রমণ ভাগের চার স্তম্ভ সিলভা, মাহরেজ, রাহিম স্টার্লিং এবং কেভিন দা ব্রুইনের ছন্দের সামনে শুরু থেকেই অসহায় দেখাতে শুরু করে ম্যান ইউয়ের রক্ষণকে। পেপ অতিরিক্ত মিডফিল্ডারে দল সাজানোয় আরওই ক্ষিপ্র হয়ে ওঠে সিটির আক্রমণাত্মক ফুটবল।
ঝড় তোলা ফুটবলের পুরস্কার পেতে দেরি হয়নি সিটির। বক্সের বাইরে থেকে পর্তুগিজ তারকা সিলভার দুরন্ত শট জড়িয়ে যায় জালের উপরের দিকে। গত বার সিটির ত্রিমুকুট জয়ে খুব বড় কোনও ভূমিকা নিতে পারেননি সিলভা। কিন্তু এইবার সেরা ফর্মেই রয়েছেন। ৩৩ মিনিটে সিটির দ্বিতীয় গোলটিও তাঁর তৈরি করা। সিলভার ম্যান ইউ রক্ষণ চেরা একটি পাস ধরেই দাভিদ দা গিয়াকে বোকা বনিয়ে গোল করে যান মাহরেজ। পাঁচ মিনিট পরে দা ব্রুইনের জোরাল শটে ৩-০ করে ফেলে ম্যান সিটি।
প্রথমার্ধেই সিটি এমন ঝড় তুলেছিল দল যে, মনে হচ্ছিল দা ব্রুইনরা না গোলের মালা পরিয়ে দেয় ম্যান ইউয়ের গলায়। দা গিয়া তিনটি গোল খেলেও অসংখ্য বাঁচিয়েছেন। সেই কারণেই আরও বেশি গোলের লজ্জা থেকে বাঁচল সোলসারের দল। সিলভার একটি শট উড়ে গিয়ে গিয়ে বাঁচান দা গিয়া। স্টার্লিং সহজ সুযোগ নষ্ট না করলেও গোলের সংখ্যা বাড়তে পারত।