শহরের বস্তিবাসীদের সুবিধার্থে এবার নতুন উদ্যোগ নিলো রাজ্যের শাসকদল। সূত্রের খবর, কলকাতায় বসবাসকারী গরিব বস্তিবাসীদের জন্য ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আবাসন নির্মাণের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কোথাও কেএমডিএ-র উদ্যোগে, কোথাও কলকাতা পুরসভার নিজস্ব অর্থে বস্তিবাসীর জন্য আবাসন তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি বস্তির রাস্তা, ড্রেন, শৌচাগারের মানোন্নয়ন, পর্যাপ্ত পানীয় জল, আলোর ব্যবস্থা দ্রুত করতেও নির্দেশ দিয়েছেন পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘রাজ্যের এক জন মানুষকেও যাতে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতে না হয়, সে জন্য মুখ্যমন্ত্রী ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে গ্রামের পাশাপাশি শহরেও বড় বড় আবাসন বানানো হচ্ছে। কলকাতায় বহু মানুষ বস্তিতে থাকেন। তাঁদের জন্য বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ফ্ল্যাট বানিয়ে দিচ্ছি আমরা।’
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার বাড়ি প্রকল্পে যে সব ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে সে-সবের গড় আয়তন প্রায় ২০০ বর্গফুট। এক কামরার ঘর ছাড়াও একটি শৌচাগার এবং ছোট বারান্দা-সহ রান্নাঘরও থাকবে। আবাসন নির্মাণ, পানীয় জল, বিদ্যুৎ সংযোগ, রাস্তা ও নিকাশি নালা তৈরির যাবতীয় খরচ বহন করবে রাজ্য সরকারই।
সরকারি সূত্রে খবর, বস্তিবাসীর মাথার ছাদ জোগাতে এই প্রকল্পে পূর্ব কলকাতার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের ক্যানেল সাউথ রোডে প্রায় ২৯ কোটি টাকা খরচে আবাসন তৈরি হচ্ছে। এখানে ৩০০টি পরিবার থাকতে পারবে। তার পাশেই তৈরি হবে নাইট শেল্টার। ৭০-৮০ জন গৃহহীন মানুষ এখানে রাত কাটাতে পারবেন। যে জমিতে বস্তিবাসীদের আবাসন এবং নাইট শেল্টার গড়ে উঠছে, সেটি এক সময়ে কেআইটি-র হাতে ছিল। সম্প্রতি তা পুরসভাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বেহালার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তি সঙ্ঘের কাছেও এই প্রকল্পে আবাসন নির্মাণের কাজ চলছে। এখানে ৭০টির মতো পরিবার থাকতে পারবে। ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের দেউ সিং রোডেও আবাসন তৈরি হবে। সেখানে ১১০টির মতো ফ্ল্যাট থাকবে। একই প্রকল্পে গোপালনগরের রাখালদাস আড্ডি রোডে আবাসন গড়ছে কেএমডিএ। সেখানে ৭০-৮০টি পরিবার থাকতে পারবে। টালিগঞ্জের কুদঘাট অঞ্চলে ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রিক ফিল্ড রোডেও আবাসন গড়বে কেএমডিএ। জমিও চিহ্নিত হয়েছে। সম্প্রতি টেন্ডারও ডেকেছে কেএমডিএ। এখানে ১০০টির বেশি ইউনিট থাকবে। খরচ হবে প্রায় ১৬ কোটি টাকা।