দেশের অর্থনীতির ক্রমাগত পতন ঠেকাতে শিল্পপতিদের কর্পোরেট ট্যাক্সে ছাড় ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। সরকারের দাবি, এই নীতির জেরে ভারতের মাটিতে ব্যবসার জোয়ার আসবে। যার ফলে ঘুচে যাবে অর্থনীতির অন্ধকার। তবে মোদী সরকারের এই নীতির জোরদার বিরোধিতা করলেন সদ্য নোবেল জয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, অর্থনীতির পতন ঠেকাতে গেলে গরিবের হাতে টাকা দিন।
এক সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যে সমস্ত শিল্পপতিরা ঋণ নিয়েছেন ঋণ মুকুবের জন্য তাদের উপর বেশি সদয় না হয়ে বড় সংখ্যক মানুষের কথা ভাবা দরকার কেন্দ্রের। কর্পোরেটরা টাকার গদির উপর বসে রয়েছে। কিন্তু চাহিদার অভাবে তারা বিনিয়োগ করতে পারছে না। ফলে চাহিদা যাতে বাড়ে সে দিকে নজর দেওয়া উচিত সরকারের। আর এটা করতে গেলেই দেশের গরিব মানুষের কথা ভাবতে হবে সরকারকে। তাদের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’ এমনটাই মনে করেন নোবেলজয়ী।
২০২০-২১ সালের বাজেটের প্রসঙ্গে অভিজিৎ কি প্রত্যাশা করেন সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে তিনি বলেন, ‘সরকারের তরফে কর্পোরেট কর ছাড় দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আপনারা যদি কর্পোরেট সংস্থাগুলির সঙ্গে কথা বলেন তাহলে বুঝবেন দেশে বিনিয়োগের বাজারটাই নেই। ফলে বিনিয়োগের রাস্তা তৈরি করতে গেলে মানুষের হাতে টাকা দিতে হবে।’ নিজের ব্যাখ্যায় তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের হাতে টাকা আসলে সেই টাকা মানুষ খরচ করবেই। ধনীদের হাতে টাকার যোগান দিয়ে তো লাভ কিছু নেই।’
উল্লেখ্য, নোবেল জয়ের পরই বিশ্বমঞ্চে দাঁড়িয়ে মোদী সরকারের আর্থিক নীতির সমালোচনা করেছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে যথারীতি খড়গহস্ত হয়ে ওঠে বিজেপি। ব্যক্তিগত স্তরেও আক্রমণ শানানো হয় তাঁকে। যদিও সেই ঘটনার পর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নোবেলজয়ীর সাক্ষাতে বিতর্কে ধামাচাপা পড়ে। তবে এদিন ফের একবার মোদী সরকারের অর্থনীতির সমালোচনায় সরব হলেন নোবেলজয়ী।