সিএএ এবং এনআরসি ইস্যুতে শুক্রবার রাজধানীতে আয়োজন করা হয়েছিল একটি আলোচনাসভা। সেখানেই যোগ দিতে এসেছিলেন প্রাক্তন বিদেশ সচিব শিবশঙ্কর মেনন। আর সেখানে এসেই মোদী সরকারকে রীতিমতো তুলোধনা করলেন তিনি। তাঁর মতে, কূটনৈতিক ভাবে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে ভারত। শুধুমাত্র দেশের অন্দরেই নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনটাই মত তাঁর।
মেনন বলেছেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর-সহ একাধিক ইস্যুতে কূটনৈতিক ভাবে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে ভারত। শুধুমাত্র দেশের অন্দরেই নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও এখন ভারতের সমালোচনা শুরু হয়েছে। গত কয়েক মাসে ভারত সম্পর্কে সকলের ধারণাই পাল্টে গিয়েছে। এমনকি বন্ধু দেশগুলিও পিছু হটতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ওদের নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে দিন। আমাদের বন্ধুরাই যদি এমন ভাবেন, তাহলে শত্রুরা কী ভাবছেন ভাবুন। এই পরিস্থিতির জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী’।
সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে শুরু থেকেই দেশের বিরোধী শিবিরের তোপের মুখে পড়েছে মোদী সরকার। বেছে বেছে অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এত দিন ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ হিসাবে মর্যাদা পেলেও, মোদী সরকারের আমলে ভারত ধীরে ধীরে পাকিস্তানের পথে হাঁটছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এ দিন একই কথা বলেন মেননও। তিনি বলেন, ‘এককথায়, গত কয়েক মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে নিজেদের এক আসনে বসিয়ে ফেলেছি আমরা।’
এই জোড়া নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই গত মাসে ভারতের দূত হিসাবে মার্কিন কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক এড়িয়ে যান বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, জম্মু-কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি নিয়ে আঙুল ওঠা ঠেকাতেই কি বৈঠক এড়িয়ে যান তিনি? কেন্দ্রীয় সরকার তা অস্বীকার করলেও, এ দিন সেই প্রশ্নই উস্কে দেন মেনন। তিনি বলেন, ‘এই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সম্পর্কে ভালই অবগত আমরা। তাই মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক এড়িয়ে যেতে হয়েছে বিদেশমন্ত্রীকে।’