গতবছরের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে যখন মহারাষ্ট্রের নেতা-মন্ত্রীরা যখন যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় আসার লড়াই চালাচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময়কালেই অসময়ে বৃষ্টির কারণে আত্মহত্যা করেছেন সেই রাজ্যেই ৩০০-র বেশি কৃষক। গত চার বছরের মধ্যে এক মাসে সর্বাধিক কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ওই নভেম্বর মাসেই। এর আগে ২০১৫ সালে বেশ কয়েকবার এক মাসে কৃষক আত্মহত্যার পরিসংখ্যান ৩০০ পার করেছিল।
মহারাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে পাওয়া এক তথ্যে জানা গিয়েছে, অকালবৃষ্টির জেরে অক্টোবর মাস থেকে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে। এই বৃষ্টির জেরেই ৭০ শতাংশ খারিফ শস্য নষ্ট হয়েছে। যার জেরে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা ছিল না বেশ কিছু কৃষকদের সামনে। আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা সর্বাধিক খরাপ্রবণ এলাকা মরাঠবাড়ে ঘটেছে। এই এলাকায় এক মাসে ১২০টি ও বিদর্ভে ১১২টি কৃষক আত্মহত্যার মামলা দায়ের হয়েছে। সাধারণত এই বিদর্ভ এলাকাতেই সর্বাধিক কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকে প্রত্যেক বছরই।
ক্ষমতায় আসার পরই যদিও মহারাষ্ট্রের জোট সরকার মাথাপিছু ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মকুব করেছে। এর আগে ২০১৭ সালে মহারাষ্ট্রের তৎকালীন বিজেপি সরকার ৪৪ লক্ষ চাষিদের ১৮ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ মকুব করেছিল। তবুও তাতে বিশেষ কিছু লাভ হয়নি সেখানকার কৃষকদের। সরকারের পক্ষ থেকে ঠিকঠাক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চাষিরা যেই তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছেন।
রাজ্য সরকারের রিপোর্ট বলছে, ২০১৮ সালে মহারাষ্ট্রে সর্বমোট ২৫১৮টি কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৯ সালে সেই সংখ্যাই সামান্য বেড়েছে। ফেলে আসা বছরে মহারাষ্ট্রের ২৫৩২ জন কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। অনাবৃষ্টি ও অকালবৃষ্টি, এই দুই বর্ষার জেরে ভুক্তভোগী কৃষকদের সংখ্যা প্রায় এক কোটি বলে জানা গিয়েছে। যা রাজ্যের মোট কৃষকদের দুই তৃতীয়াংশ। এই পরিসংখ্যান দেখার পরই নড়েচড়ে বসেছে জোট সরকার। জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সেই কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে।